জলদস্যু কাহিনী by হেমেন্দ্রকুমার রায়, chapter name 2

2

পলাতক রণতরী

 

কালোদেড়ের নাম লোকের মুখে মুখে ফিরতে দেরি লাগল না।

প্রথমেই তার কবলগত হল একখানা ইংরেজ জাহাজ-গ্রেট অ্যালেন। তারপরেই প্রমাণিত হল কালোদেড়ে যে-সে সাধারণ বোম্বেটে নয়! সে কেবল আত্মরক্ষায় অক্ষম সওদাগরি জাহাজ দেখলেই তেড়ে এসে হাতিয়ার হাঁকড়ায় না এবং রণতরীর সামনে পড়লেই চটপট চম্পট দিয়ে প্রাণ বাঁচাবার চেষ্টা করে না।

‘স্কারবরো’ হচ্ছে ইংরেজদের বৃহৎ যুদ্ধ জাহাজ, তার পাটাতনে সাজানো সারে সারে ভারী ভারী কামান এবং তার নৌসৈন্যদের প্রত্যেকেই বন্দুকের অধিকারী।

হঠাৎ ‘স্কারবরো’ গিয়ে হাজির বোম্বেটের ‘প্রতিহিংসা’র সামনে।

যুদ্ধজাহাজের নায়ক বরাবরই দেখে এসেছেন, রণতরীর সম্মুখীন হলেই বোম্বেটেরা তাড়াতাড়ি জাহাজের সব পাল খাটিয়ে দিয়ে বাঘের সামনে ভীরু হরিণের মতো পালাবার চেষ্টা করে। সেই চেষ্টা ব্যৰ্থ করবার জন্যে তিনি আগে থাকতেই নিজের জাহাজের সব পাল তুলে দিয়ে কামান দাগতে দাগতে বেগে এগিয়ে গেলেন।

কিন্তু কী আশ্চর্য, ‘প্রতিহিংসা’ পালাবার কোনও চেষ্টাই করলে না!

মুখভরা হাসি নিয়ে নিজের জাহাজের পাটাতনের উপরে অচল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কালোদেড়ে, তার বেণিবদ্ধ শ্মশ্রু দুইভাগে বিভক্ত হয়ে দুই স্কন্ধের উপরে নিক্ষিপ্ত, তার টুপিতে সংলগ্ন প্রজ্বলিত পলিতাগুলো অগ্নিসর্পশিশুর মতো জোর-হাওয়ায় দিকে দিকে ছিটকে পড়ে যেন ছড়িয়ে দিচ্ছে আগুনের হলকা!

বোম্বেটে গোলন্দাজরাও কামানে অগ্নিসংযোগ করতে উদ্যত হল।

কালোদেড়ে বললে, আর একটু সবুর করো, এখনও কামান দাগার সময় হয়নি। ওদের আরও কাছে আসতে দাও।

তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সে দেখতে লাগল, দুই জাহাজের মাঝখানকার দূরত্ব ক্রমেই কমে আসছে। তারা প্রায় সামনাসামনি এসে পড়ল অবশেষে।

আচম্বিতে শূন্যে তরবারি চালনা করে কালোদেড়ে হুংকার দিয়ে হুকুম দিলে, সময় হয়েছে! কামান ছোড়ো!

‘প্রতিহিংসা'র সমস্ত কামান একসঙ্গে গর্জন করে উঠল—গুডুম, গুডুম, গুডুম, গুডুম!

যুদ্ধজাহাজ স্কারবরো প্রথম আক্রমণেই বেধড়ক মার খেয়ে একেবারে কত হয়ে পড়ল! বিপুল বিস্ময়ে নৌসেনানায়ক কোনওরকমে নিজের রণতরী সামলে নিয়ে সেখান থেকে তাড়াতাড়ি সরে পড়ে নিজেদের মানরক্ষা করতে না পারলেও রক্ষা করলেন পৈতৃক প্রাণগুলো!

বোম্বেটে-জাহাজের পিছনকার সব চেয়ে উঁচু পাটাতনের উপরে দেখা গেল—গগনভেদী চিৎকারে দিগবিদিক কাঁপিয়ে বিরাটবপু কালোদেড়ে ইংরেজ নৌসেনাদের উপরে গালাগালি ও অভিশাপ বর্ষণ করছে এবং মাথার উপরে বনবনিয়ে তরবারি ঘোরাতে ঘোরাতে কখনও লাফ মারছে শূন্যপথে ও কখনও মেতে উঠছে তাণ্ডব নৃত্যে।

 

গৌরবের তুঙ্গশিখরে

 

ইংরেজ রণতরীকে হারিয়ে দেবার পর কালোদেড়ের খাতিরের সীমা রইল না। তার নাম শুনলেই দেহপিঞ্জর ছেড়ে ভয়ে উড়ে যেতে চায় লোকের প্রাণপাখি! বিশেষত মালবাহী জাহাজি কাপ্তেনদের দূর্ভাবনার অন্ত নেই। যার দেখা পেলে যুদ্ধে নিরস্ত হয়ে পিটটান দেয় ইংল্যান্ডরাজের সশস্ত্র ও সসজ্জ রণতরী, তার সঙ্গে মুখোমুখি হলে নিরস্ত্র ও নির্বল সওদাগরি জাহাজ কতটুকু বাধা দিতে পারে?

না, বাধা দিতে পারেনি সত্যসত্যই। আর এই সত্য বোঝা গেল কিছুদিন যেতে-না-যেতেই। কারণ উপরি-উপরি কয়েকখানা জাহাজ বন্দি করে কালোদেড়ে হয়ে দাঁড়াল রীতিমতো এক নৌবহরের অধিকারী। যেসব জাহাজ উল্লেখযোগ্য মনে হল না, সেগুলোকে সে বিনাবাক্যব্যয়ে ডুবিয়ে দিলে মহাসাগরের অতল পাতালে। সফল হল কালোদেড়ের বহুদিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা–তার তাবে এখন এসেছে সত্যসত্যই নৌবহর! কোনও সওদাগরি জাহাজ আজ অস্ত্রবলে বলীয়ান হলেও তার সঙ্গে আর পাল্লা দিতে পারবে না!

বন্দি বা ধৃত জাহাজের অসংখ্য লোক প্রাণ দিলে বোম্বেটেদের বন্দুক বা অন্যান্য অস্ত্রের মুখে। তুলনায় তাদের ভাগ্য ভালোই বলতে হবে। কিন্তু যারা মরল না এবং যারা জখম হয়েও বেঁচে রইল তাদের পরিণাম হল মর্মবিদারক। কালোদেড়ের নিদারুণ নির্দেশে সাগরে ঝাঁপ খেতে বাধ্য হয়ে তাদের প্রত্যেকেই লাভ করলে সজ্ঞানে সলিলসমাধি! ভালোয় ভালোয় আত্মসমর্পণ করেও বাঁচোয়া নেই, কেঁদে-কেটে হাতে-পায়ে ধরে ক্ষমা চাওয়াও ব্যর্থ—কালোদেড়ের পাষাণ-হৃদয়ে কেউ দেখেনি দয়ামায়ার ছিটেফোটাও! তার মুখে শোনা যায় একই ধরনের উক্তি, ওদের জোর করে ছুড়ে ফেলে দে সমুদ্রে! হোক ওরা মাছেদের খোরাক—করুক ওরা হাঙরদের উদরপূরণ!

সে সময় অসীম সাগরের আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে কত হাজার মানুষের তীব্র ক্ৰন্দনধ্বনি শুনে চমকিত হয়ে উঠেছিল প্রতিধ্বনির পর প্রতিধ্বনি, কোথাও তার কোনও হিসাব লেখা নেই!

তার দুষ্কর্মের সাক্ষ্য হতে পারে এমন কোনও মানুষ বা জাহাজের অস্তিত্ব রক্ষা করা কালোদেড়ের কাছে ছিল দস্তুরমতো নির্বুদ্ধিতার কাজ।

 

কালোদেড়ের নতুন বউ

 

এক জাহাজের অধ্যক্ষকে বলে ‘কাপ্তেন’ এবং একাধিক জাহাজের অধ্যক্ষ ‘কমোডোর’ নামে পরিচিত। কালোদেড়ে গ্রহণ করলে উচ্চতর ‘কমোডোর’ উপাধি।

সে বললে, আহা, আজ আমার মা বেঁচে থাকলে পুত্রের গৌরবে হতেন গৌরবিনী! কিন্তু মা পরলোকে গেলেও ইহলোকে বসে এতটা গৌরব চুপচাপ ধাতস্থ করাও যায় না। অতএব সে নির্দেশ দিলে—উৎসব কর!

কালোদেড়ের বোম্বেটে-শাস্ত্রে উৎসবের অর্থ হচ্ছে নারকীয় কাণ্ড। সাগরের দিকে দিকে তার নৌবহরের গোলন্দাজরা সমস্ত কামান থেকে ক্রমাগত অগ্নিবৃষ্টি করে দেখাতে লাগল বিরাট ও ভয়ংকর আগ্নেয় দৃশ্য!

দৈবগতিকে ও দুর্ভাগ্যক্রমে যারা তথাকথিত উৎসবের সেই অগ্ন্যুৎপাতের মধ্যে এসে পড়ল, তারা যে কেউ ধনে-প্রাণে রক্ষা পেলে না, সেকথা বলাই বাহুল্য। একে একে জলে ডুব মারলে চার-চারখানা লুষ্ঠিত জাহাজ।

তারপর নামে উৎসব শেষ হল বটে, কিন্তু জলপথে ছুটোছুটি করে জাহাজের পর জাহাজের উপরে হানা দিয়ে লুঠতরাজ, রক্তপাত ও নরহত্যা প্রভৃতি পৈশাচিক কাণ্ড চলল অবিশ্রান্ত।

কালোদেড়ে ধনী যাত্রীদের কিন্তু প্ৰাণে মারত না, বন্দি করত। বন্দরে পৌছে আত্মীয়দের কাছে খবর পাঠিয়ে প্রচুর টাকা মুক্তিমূল্য আদায় না করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হত না। বলা বাহুল্য ইতিমধ্যে ধনী বন্দিদের জড়োয়া গহনা ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিস লুষ্ঠিত হয়ে উঠত গিয়ে কালোদেড়ের প্রশস্ত ভাণ্ডারে। এইভাবেও সে প্রভূত ঐশ্বর্যের অধিকারী হয়েছিল।

ওই অঞ্চলে সমুদ্রের চারিদিকে আছে অসংখ্য ছোটো ছোটো দ্বীপ। সেইসব নামহীন দ্বীপে কোনও মানুষ বাস করে না, তাদের কোথায় কী আছে তাও কেউ জানে না। প্রবাদ, এমনি কোনও অজানা দ্বীপে কালোদেড়ে এডওয়ার্ড টিচ তার বিপুল ঐশ্বর্য লুকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু সেই গুপ্তধনের ঠিকানা কেউ আদায় করতে পারেনি।

কালোদেড়ে বলত, আমি আর শয়তান ছাড়া আমার গুপ্তধনের ঠিকানা আর কারুর জানা নেই।

তার বসনভূষণও এখন জাহির করে প্রচুর জাঁকজমক। তার হাতের প্রত্যেক আঙুলে শোভা পায় হিরা-পান্না বসানো আংটি। তার গলায় দোলে অনেকগুলো সোনার হারের লহর। তার বুকের বন্ধনীতে ঝোলে এখন নতুন যে তিনজোড়া পিস্তল, তাদের নলচেগুলো রুপো দিয়ে গড়া এবং তাদের কুঁদোগুলো মূল্যবান প্রস্তর দিয়ে অলংকৃত।

কালোদেড়ের এক প্রধান সহকারী ও প্রিয়পাত্র ছিল ইস্রায়েল হ্যান্ডস। একদিন তাকে ডেকে সে চুপিচুপি বললে, আমাদের দল কি অতিরিক্ত ভারী হয়ে পড়েনি?

—নিশ্চয়! এত লোককে লাভের অংশ দিতে দিতে আমাদের নিজেদের আয়ের পরিমাণ কমে যাচ্ছে।

—ঠিক ধরেছ হ্যান্ডস! তাহলে কৌশলে অংশীদারের দল হালকা করে ফেলা যাক!

বিভিন্ন ওজর দেখিয়ে দুইবারে দুইদল লোককে বিভিন্ন বিজন দ্বীপে নামিয়ে দিয়ে বাছা বাছ লোক নিয়ে কালোদেড়ে দূর সমুদ্রে নিরুদ্দেশ হয়ে গেল—একবারও ভেবে দেখলে না যে, এতদিন বিশ্বস্ত ভাবে যারা তার হুকুম মেনে এসেছে, জনহীন অজানা দ্বীপে পরিত্যক্ত হয়ে তাদের দুরবস্থা উঠবে কতখানি চরমে! পরে সে কেবল এইটুকু উপলব্ধি করতে পেরেছিল যে হালকা দল নিয়ে কাজ করলে পকেট বেশি ভারী হয় বটে, কিন্তু আত্মরক্ষার দিক দিয়ে সৃষ্টি হয় গুরুতর সমস্যা!

বৎসরকালব্যাপী লুটতরাজ ও নরমেধযজ্ঞের পর আটলান্টিক মহাসাগর ও তার তীরবর্তী দেশগুলো যখন হয়ে উঠেছে প্রায় অরাজক ও হত্যা-হাহাকারে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত এবং সবাই যখন দুঃখেশোকে-ক্রোধে একান্ত মরিয়া হয়ে কালোদেড়ের বিরুদ্ধে একবাক্যে করেছে বিদ্রোহ ঘোষণা, তখন সে একদিন অম্লানবদনে বললে, ‘হ্যান্ডস, চলো নর্থ ক্যারোলিনার দিকে। দিন-রাত খালি জল আর জল দেখতে আমার আর ভালো লাগছে না!

—জল দেখা ছাড়া আর উপায় কী? স্থলে নামলেই তো আমাদের ধরা পড়ে ফাঁসিকাঠের দোলনায় দুলতে হবে!

—কুছ পরোয়া নেই। আমরা ফাঁসির দোলনায় দুলব না,—রাজার কাছে মার্জনা ভিক্ষা করব।

হ্যান্ডস সবিস্ময়ে বলে উঠল, বলেন কী, কর্তা? মার্জনা ভিক্ষা? কে আমাদের মার্জনা করবে?

—গভর্নর চার্লস ইডেন আমাদের হাসিমুখে মার্জনা করবেন।

—বলেন কী, হাসিমুখে?

—হ্যাঁ। গভর্নর ইডেন বড়ো ভালো লোক হে। যুক্তি মানেন। আমার যুক্তি কী জানো ভায়া? উৎকোচ! ঘুষখোরকে বশ করা মোটেই কঠিন নয়।

নর্থ ক্যারোলিনা হচ্ছে আমেরিকার আটলান্টিক সাগরতীরের একটি প্রদেশ। সেই প্রদেশের বাথ নগরে বাস করেন ইংল্যান্ডের রাজপ্রতিনিধি চার্লস ইডেন। কালোদেড়ের জাহাজ গিয়ে নোঙর ফেললে সেইখানেই।

মানুষ চিনতে ভুল করেনি কালোদেড়ে। গভর্নর ইডেন তার যুক্তি অকাট্য বলেই মেনে নিলেন। উচিতমতো উৎকোচ হজম করে তিনি কালোদেড়ের সমস্ত অপরাধ কেবল রাজার নামে ক্ষমাই করলেন না, উপরন্তু তার সঙ্গে জমে উঠল তার দস্তুরমতো দোস্তি—যাকে বলে দহরম-মহরম আর কী! সবাই অবাক! হতভম্ব!

বাথ শহরের একটি মেয়েকে দেখে কালোদেড়ের ভারী পছন্দ হল। তৎক্ষণাৎ সে করলে বিবাহের প্রস্তাব। কন্যাও নারাজ নয়। তখন সদাশয় গভর্নর বললেন, আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এই শুভকার্য সম্পন্ন করব।

এটি কালোদেড়ের ত্রয়োদশ কি চতুর্দশ বিবাহ তা ঠিক করে বলা যায় না। বিবাহে নিতবরের আসন গ্রহণ করলে গভর্নরের সেক্রেটারি টোরিয়াস নাইট! খুব ঘটা করে শুভকার্য সম্পন্ন হল বটে, তবে শহরের বনিয়াদি বংশের সন্ত্রান্ত ব্যক্তিগণ আমন্ত্রিত হয়েও উৎসবে যোগদান করলেন না।

কিন্তু কালোদেড়ে তাদের উপরেও নিলে একহাত! খুব জমকালো সাজপোশাক পরে সে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে একে একে বিখ্যাত সন্ত্রান্ত বংশীয়দের বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় আর দারোয়ান ও খানসামাদের ডেকে বলে, তোমাদের মনিবকে গিয়ে খবর দাও, স্বয়ং শ্রীমতী টিচ দ্বারদেশে অপেক্ষা করছেন।

দারোয়ান ও খানসামাদের ইতস্তত করতে দেখলেই কালোদেড়ে তার রত্নখচিত ও রুপোয় বাঁধানো পিস্তলগুলো গুড়ম গুড়ম শব্দে ছুড়তে শুরু করে দেয়, দিকে দিকে বোঁ-বোঁ করে ছুটতে থাকে গরমগরম বুলেট এবং দারোয়ান ও খানসামারা হয় ভয়ে থরহরি কম্পমান! তারপরেই দরজা খুলতে ও গৃহস্বামীর আতিথ্যলাভ করতে বিলম্ব হয় না। কালোদেড়ে বারবার এইভাবে প্রমাণিত করলে সেই পুরাতন সত্যকথাটাই—জোর যার, মুল্লুক তার!

এখানে এসেও কিন্তু কালোদেড়ে নদী-পথে বোম্বেটেগিরি ছাড়ল না—বহু জাহাজ থেকে মালপত্তর ও ধনরত্ন লুষ্ঠিত হতে লাগল এবং বলা বাহুল্য যে, গোপনে তার লাভের অংশ থেকে বঞ্চিত হলেন না স্বয়ং গভর্নরও!

জাহাজের মালিকদের কাছ থেকে অভিযোগ এলে গভর্নর ইডেন মুখে যথেষ্ট সহানুভূতি প্রকাশ করলেও কাজে কিছুই করেন না। জাহাজের মালিকরা শেষটা এখানে হতাশ হয়ে পাশ্ববর্তী প্রদেশ ভার্জিনিয়ার গবর্নর স্পটসউডের কাছে গিয়ে নিজেদের জরুরি নালিশ জানালেন।

ফল পাওয়া গেল হাতে হাতে। গভর্নর স্পট্‌সউড তৎক্ষণাৎ ঘোষণা করে দিলেন যে কালোদেড়েকে গ্রেপ্তার বা বধ করতে পারবে, তাকেই হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। সঙ্গে সঙ্গে ইংল্যান্ডের নৌবহরের দক্ষ যোদ্ধা লেফটেনান্ট রবার্ট মেনার্ডের উপরে হুকুম জারি হল, তিনি যেন অবিলম্বে কালোদেড়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করেন।

গভর্নর ইডেনের সেক্রেটারি টোরিয়াসও কালোদেড়ের কাছ থেকে অল্পবিস্তর ঘুষ খেয়ে তার ভক্ত হয়ে পড়েছিল। ইংরেজ নৌসেনাদের এই যুদ্ধ-প্রস্তুতির কথা শুনেই সে প্রমাদ গুনে বোম্বেটের কাছে তাড়াতাড়ি খবর পাঠিয়ে দিলে।