Hridoye Bangladesh by Kyawshen Rakhine, chapter name হে বাংলাদেশ তুমি আরো একবার গর্জে ওঠো

হে বাংলাদেশ তুমি আরো একবার গর্জে ওঠো

তেত্রিশ বছর কাটলো,কেউ কথা রাখেনি।

সুনীল গাঙ্গোপাধ্যায়ের তেত্রিশ বছর কেটেছে।

আমিও তোমাদের অনাদরে-অবহেলায়

বায়ান্ন বছর কাটিয়েছি।

কেউ কথা রাখেনি।

 

আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছো,

এই আমার পরম পাওয়া?

আমি এখনো শোষন,বঞ্চনার

নির্মমতা থেকে মুক্তি পাইনি।

বাংলাদেশ নামে আত্ম প্রকাশ করে

ভেবেছিলাম এবার অন্ততঃ শান্তিতে

ঘুমোতে পারবো।জেগে দেখি,

“পশু আর প্রিয়তমা এক হয়ে গেছে

মহত্বের স্নায়ু ছিঁড়ে নিতে!”

 

তুমি কে,আমি কে 

বাঙ্গালী-বাঙ্গালী 

স্লোগানের যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলে

তারা পরস্পরের দাঙ্গাফাসাদের লিপ্ত।

পঁচাত্তরের পনেরোই আগষ্ট বুলেটে

ক্ষত-বিক্ষত করে দিলে,

তোমাদের জনকের বুক!

আমি তোমাদের নির্মমতা দেখে

শিউরে উঠেছিলাম।

শুরু হলো ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড।

 

গুটিকতক ব্যক্তির স্বার্থে তোমাদের গৌরবময়

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে করলে বিকৃত!

মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তানেরা আমায়

প্রশ্নের সন্মুখীন করেছে-

“তোমাদের যা বলার ছিল,

বলেছে কি তা বাংলাদেশ!”

তোমরা বলো, আমি কি জবাব দেবো তাদের।

বুদ্ধিজীবিদের হত্যা বিচার তোমরা করতে পারোনি।

বঙ্গবন্ধু খুনিরা এখনো নানান ষড়যন্ত্রের লিপ্ত।

পাকিস্তান পেয়ারি আলবদর,জামাতিরা

নানান কূটকৌশলে নবসজ্জিত

নৌকাতে উঠে গেছে, নৌকাকে ফুতো করতে।

ঘাতক রাজাকারেরা হয়ে গেছো বীর মুক্তিযোদ্ধা! 

তেঁতুল হুজুর ছাগুরা এখন 

বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ভাংচুরের লিপ্ত!

নবপ্রজন্ম তরুণেরা আমায় প্রশ্ন করে,

বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলাদেশের এসব কেনো?

বলে দাও,ও আমার জন্মভুমি বাংলাদেশ।

 

আমি কি ক্ষুদিরাম, সূর্যসেনের

                           বাংলাদেশ!

মওলানা ভাসানীর,শেখ মুজিবের

                               বাংলাদেশ!!

আমি কি নূর হোসেন,ডাঃ মিলনের

                                 বাংলাদেশ!!!

 

দোহাই তোমাদের! 

আমাকে আর বিব্রত করো না।

মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের যা বলার ছিল

আমাকে তা বলতে দাও।

বিশ্বের দরবারে ভিক্ষুকের দেশ হিসেবে নয়

রবী ঠাকুরের,শেখ মুজিবের সোনার বাংলাদেশ,

মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লক্ষ শহীদের দেশ হিসেবে

আমাকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দাও।

 

তোমাদের অপরাজনীতি বন্ধ করো,

রক্তের হোলি খেলা বন্ধ করো,

নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থার করো,

শিশুদের শারিরীক, মানসিক শাস্তি বন্ধ করো,

আদিবাসীদের নিরাপত্তা দাও।

            অন্যথায়,

হে বাংলাদেশ তুমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়

আরো একবার গর্জে ওঠো।।