ৱাশিয়াৱ চিঠি by ৱবীন্দ্ৰনাথ ঠাকুৱ, chapter name দশ

দশ

১০

D. “Bseṁen”

 বিজ্ঞানশিক্ষায় পুঁথির পড়ার সঙ্গে চোখের দেখার যােগ থাকা চাই, নইলে সে-শিক্ষার বারো আনা ফাঁকি হয়। শুধু বিজ্ঞান কেন, অধিকাংশ শিক্ষাতেই এ-কথা খাটে। রাশিয়াতে বিবিধ বিষয়ের ম্যুজিয়মের যােগে সেই শিক্ষার সহায়তা করা হয়েছে। এই ম্যুজিয়ম শুধু বড়াে বড়াে শহরে নয়, প্রদেশে প্রদেশে, সামান্য পল্লীগ্রামের লােকেরও আয়ত্তগােচরে।


 চোখে দেখে শেখার আর-একটা প্রণালী হচ্ছে ভ্রমণ। তােমরা তাে জানােই আমি অনেক দিন থেকেই ভ্রমণ-বিদ্যালয়ের সংকল্প মনে বহন করে এসেছি। ভারতবর্ষ এতবড়ো দেশ, সকল বিষয়েই তার এত বৈচিত্র্য বেশি যে, তাকে সম্পূর্ণ করে উপলব্ধি করা হণ্টারের গেজেটিয়র পড়ে হতে পারে না। একসময়ে পদব্রজে তীর্থভ্রমণ আমাদের দেশে প্রচলিত ছিল—আমাদের তীর্থগুলিও ভারতবর্ষের সকল অংশে ছড়ানাে। ভারতবর্ষকে যথাসম্ভব সমগ্রভাবে প্রত্যক্ষ অনুভব করবার এই ছিল উপায়। শুধুমাত্র শিক্ষাকে লক্ষ্য করে পাঁচ বছর ধরে ছাত্রদের যদি সমস্ত ভারতবর্ষ ঘুরিয়ে নেওয়া যায় তাহলে তাদের শিক্ষা পাকা হয়।


 মন যখন সচল থাকে সে তখন শিক্ষার বিষয়কে সহজে গ্রহণ ও পরিপাক করতে পারে। বাঁধা খােরাকের সঙ্গে সঙ্গেই ধেনুদের চরে খেতে দেওয়ারও দরকার হয়—তেমনি বাঁধা শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গেই চ’রে শিক্ষা মনের পক্ষে অত্যাবশ্যক। অচল বিদ্যালয়ে বন্দী হয়ে অচল ক্লাসের পুঁথির খােরাকিতে মনের স্বাস্থ্য থাকে না। পুঁথির প্রয়ােজন একেবারে অস্বীকার করা যায় না—জ্ঞানের বিষয় মানুষের এত বেশি

৬৫