আবোল তাবোল
আয়রে ভোলা খেয়াল-খোলা
স্বপনদোলা নাচিয়ে আয়,
আয়রে পাগল আবোল তাবোল
মত্ত মাদল বাজিয়ে আয়।
আয় যেখানে ক্ষ্যাপার গানে
নাইকো মানে নাইকো সুর।
আয়রে যেথায় উধাও হাওয়ায়
মন ভেসে যায় কোন সুদূর।
আয় ক্ষ্যাপা-মন ঘুচিয়ে বাঁধ
জাগিয়ে নাচন তাধিন্ ধিন্,
আয় বেয়াড়া সৃষ্টিছাড়া
নিয়মহারা হিসাবহীন।
আজগুবি চাল বেঠিক বেতাল
মাতবি মাতাল রঙ্গেতে--
আয়রে তবে ভুলের ভবে
অসম্ভবের ছন্দেতে।।
হাঁস ছিল, সজারু, (ব্যাকরণ মানি না),
হয়ে গেলে "হাঁসজারু" কেমনে তা জানি না।
বক কহে কচ্ছপে "বাহবা কি ফুর্তি!
অতি খাসা আমাদের বকচ্ছপ মূর্তি।"
টিয়ামুখো গিরগিটি মনে ভারি শঙ্কা
পোকা ছেড়ে শেষে কিগো খাবে কাঁচা লঙ্কা?
ছাগলের পেটে ছিল না জানি কি ফন্দি,
চাপিল বিছার ঘাড়ে, ধড়ে মুড়ো সন্ধি!
জিরাফের সাধ নাই মাঠে ঘাটে ঘুরিতে,
ফড়িঙের ঢং ধরি, সেও চায় উড়িতে।
গরু বলে, "আমারেও ধরিলো কি ও রোগে?
মোর পিছে লাগে কেন হতভাগা মোরগে?"
হাতিমির দশা দেখ , তিমি ভাবে জলে যাই,
হাতি বলে, "এই বেলা জঙ্গলে চল ভাই"।
সিংহের শিং নেই, এই তার কষ্ট
হরিণের সাথে মিলে শিং হল পষ্ট।
হাঁড়ি নিয়ে দাড়িমুখো কে যেন কে বৃদ্ধ,
রোদে বসে চেটে খায় ভিজে কাঠ সিদ্ধ।
মাথা নেড়ে গান করে গুন গুন সংগীত
ভাব দেখে মনে হয় না জানি কি পন্ডিত!
বিড়্ বিড়্ কি যে বকে নাহি তার অর্থ-
"আকাশেতে ঝুল ঝোলে, কাঠে তাই গর্ত।"
টেকো মাথা তেতে ওঠে গায়ে ছোটে ঘর্ম
রেগে বলে , "কেবা বোঝে এ সবের মর্ম?
আরে মোলো, গাধাগুলো একেবারে অন্ধ,
বোঝেনাকো কোন কিছু খালি করে দ্বন্ধ।
কোন্ কাঠে কত রস জানে নাকো তত্ত্ব
একাদশী রাতে কেন কাঠে হয় গর্ত?"
আশে পাশে হিজি বিজি আঁকে কত অঙ্ক
ফাটা কাঠ ফুটো কাঠ হিসাব অসংখ্য;
কোন ফুটো খেতে ভাল, কোনটা বা মন্দ,
কোন্ কোন্ ফাটলের কি রকম গন্ধ।
কাঠে কাঠে ঠুকে করে ঠকাঠক শব্দ,
বলে, "জানি কোন্ কাঠ কিসে হয় জব্দ।
কাঠকুটো ঘেঁটেঘুঁটে জানি আমি পষ্ট,
এ কাঠের বজ্জাতি কিসে হয় নষ্ট।
কোন্ কাঠ পোষ মানে, কোন্ কাঠ শান্ত,
কোন্ কাঠ টিম্টিমে, কোন্টা বা জ্যান্ত।
কোন কাঠে জ্ঞান নাই মিথ্যা কি সত্য,
আমি জানি কোন্ কাঠে কেন থাকে গর্ত।"
হেড আফিসের বড় বাবু লোকটি বড় শান্ত,
তার যে এমন মাথায় ব্যামো কেউ কখনো জানত?
দিব্যি ছিলেন খোসমেজাজে চেয়ারখানি চেপে,
একলা ব'সে ঝিমঝিমিয়ে হঠাৎ গেলেন ক্ষেপে!
আৎকে উঠে হাতে পা ছুঁড়ে চোখটি ক'রে গোল
হঠাৎ বলেন, "গেলুম গেলুম, আমায় ধ'রে তোল"!
তাই শুনে কেউ বদ্যি ডাকে , কেউ বা হাঁকে পুলিশ,
কেউবা বলে, "কামড়ে দেবে সাবধানেতে তুলিস।
ব্যস্ত সবাই এদিক ওদিক করছে ঘোরাঘুরি
বাবু হাঁকেন, "ওরে আমার গোঁফ গিয়েছে চুরি"!
গোঁফ হারান! আজব কথা ! তাও কি হয় সত্যি?
গোফ জোড়া ত তেমনি আছে, কমেনি এক রত্তি!
সবাই তাঁরে বুঝিয়ে বলে, সামনে ধ'রে আয়না,
মোটেও গোঁফ হয়নি চুরি, কক্ষনো তা হয় না।
রেগে আগুন তেলে বেগুন, তেড়ে বলেন তিনি,
"কারো কথার ধার ধারিনে, সব ব্যাটাকেই চিনি।
নোংরা ছাঁটা খ্যাংরা ঝাঁটা বিচ্ছিরি আর ময়লা,
এমন গোফ ত রাখ্ত জানি শ্যামবাবুদের গয়লা।
এ গোঁফ যদি আমার বলিস করব তোদের জবাই"
এই না ব'লে জরিমানা কল্লেন তিনি সবায়।
ভীষণ রেগে বিষম খেয়ে দিলেন লিখে খাতায়
"কাউকে বেশি লাই দিতে নেই, সবাই চড়ে মাথায়।
আফিসের এই বাঁদরগুলো, মাথায় খালি গোবর
গোঁফ জোড়া যে কোথায় গেলে কেউ রাখে না খবর।
ইচ্ছে করে এই ব্যাটাদের গোঁফ ধরে খুব নাচি,
মুখ্যুগুলোর মুন্ড ধ'রে কোদাল দিয়ে চাঁচি।
গোঁফকে বলে তোমার আমার গোঁফ কি কারো কেনা?
গোঁফের আমি গোফের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা।"
শুনতে পেলুম পোস্তা গিয়ে-
তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে?
গঙ্গারামকে পাত্র পেলে?
জানতে চাও সে কেমন ছেলে?
মন্দ নয়, সে পাত্র ভাল-
রঙ যদিও বেজায় কালো;
তার উপরে মুখের গঠন
অনেকটা ঠিক প্যাঁচার মতন।
বিদ্যে বুদ্ধি? বলছি মশাই-
ধন্যি ছেলের অধ্যবসায়!
উনিশটি বার ম্যাট্টিকে সে
ঘায়েল হ'য়ে থামল শেষে।
বিষয় আশয় ? গরীব বেজায়-
কষ্টে- সৃষ্টে দিন চলে যায়।
মানুষ ত নয় ভাইগুলো তার
একটা পাগল একটা গোঁয়ার ;
আরেকটি সে তৈরি ছেলে,
জাল করে নোট গেছেন জেলে।
কনিষ্ঠটি তবলা বাজায়
যাত্রাদলে পাঁচ টাকা পায়।
গঙ্গারাম ত কেবল ভোগে
পিলের জ্বর আর পান্ডু রোগে।
কিন্তু তারা উচ্চ ঘর,
কংসরাজের বংশধর!
শ্যাম লাহিড়ী বনগ্রামের
কি যেন হয়ে গঙ্গারামের।-
যাহোক্, এবার পাত্র পেলে,
এমন কি আর মন্দ ছেলে?
দাদা গো! দেখ্ছি ভেবে অনেক দূর
এই দুনিয়ার সকল ভাল,
আসল ভাল নকল ভাল,
সস্তা ভাল দামীও ভাল,
তুমিও ভাল আমিও ভাল,
হেথায় গানের ছন্দ ভাল,
হেথায় ফুলের গন্ধ ভাল,
মেঘ-মাখানো আকাশ ভাল,
ঢেউ- জাগানো বাতাস ভাল,
গ্রীষ্ম ভাল বর্ষা ভাল,
ময়লা ভাল ফরসা ভাল,
পোলাও ভাল কোর্মা ভাল,
মাছপটোলের দোলমা ভাল,
কাঁচাও ভাল পাকাও ভাল,
সোজাও ভাল বাঁকাও ভাল,
কাঁসিও ভাল ঢাকও ভাল,
টিকিও ভাল টাক্ও ভাল,
ঠেলার গাড়ী ঠেলতে ভাল,
খাস্তা লুচি বেলতে ভাল,
গিট্কিরি গান শুনতে ভাল,
শিমুল তুলো ধুনতে ভাল,
ঠান্ডা জলে নাইতে ভাল।
কিন্তু সবার চাইতে ভাল-
পাঁউরুটি আর ঝোলা গুড়।
আর যেখানে যাও না রে ভাই সপ্তসাগর পার,
কাতুকুতু বুড়োর কাছে যেও না খবরদার!
সর্বনেশে বৃদ্ধ সে ভাই যেও না তার বাড়ি-
কাতুকুতুর কুল্পি খেয়ে ছিঁড়বে পেটের নাড়ি।
কোথায় বাড়ি কেউ জানে না, কোন সড়কের মোড়ে,
একলা পেলে জোর করে ভাই গল্প শোনায় পড়ে।
বিদ্ঘুটে তার গল্পগুলো না জানি কোন্ দেশী,
শুনলে পরে হাসির চেয়ে কান্না আসে বেশী।
না আছে তার মুন্ডু মাথা, না আছে তার মানে,
তবুও তোমায় হাসতে হবে তাকিয়ে বুড়োর পানে।
কেবল যদি গল্প বলে তাও থাকা যায় সয়ে,
গায়ের উপর সুড়সুড়ি দেয় লম্বা পালক লয়ে।
কেবল বলে, "হোঃ হোঃ হোঃ, কেষ্টদাসের পিসি-
বেচ্ত খালি কুমড়ো কচু হাঁসের ডিম আর তিসি।
ডিমগুলো সব লম্বা মতন, কুমড়োগুলো বাঁকা,
কচুর গায়ে রঙ-বেরঙের আলপনা সব আঁকা।
অষ্ট প্রহর গাইত পিসি আওয়াজ ক'রে মিহি,
ম্যাও ম্যাও ম্যাও বাকুম বাকুম ভৌ ভৌ ভৌ চীহি।"
এই না বলে কুটুৎ করে চিমটি কাটে ঘাড়ে,
খ্যাংরা মতন আঙুল দিয়ে খোঁচায় পাঁজর হাড়ে।
তোমায় দিয়ে সুড়সুড়ি সে আপনি লুটোপুটি,
যতক্ষণ না হাসবে তোমার কিচ্ছুতে নাই ছুটি।
গান জুড়েছেন গ্রীস্মকালে ভীস্মলোচন র্শমা
আওয়াজখানা দিচ্ছে হানা দিল্লি থেকে র্বমা!
গাইছে ছেড়ে প্রানের মায়া ,গাইছে তেড়ে প্রানপন,
ছুটছে লোকে চার দিকেতে ঘুরছে মাথা ভন্ ভন্।
মরছে কত জখম হয়ে করছে কত ছট্ফট্-
বলছে হেঁকে "প্রানটা গেল গানটা থামাও ঝট্ পট্ "।
বাঁধন ছেঁড়া মহিষ ঘোড়া পথের ধারে চিৎপাত ।
ভীষ্মলোচন গাইছে তেড়ে নাইকো তাহে দৃক্পাত।
চার পা তুলি জন্তু গুলি পড়ছে বেগে মুর্ছায়,
লাঙ্গুল খাড়া পাগল পারা বলছে রেগে দূর ছাই।
জলের প্রাণী অবাক মানি গভীর জলে চুপ চাপ,
গাছের বংশ হ'চ্ছে ধ্বংস পড়্ছে দেদার ঝুপ ঝাপ্।
শুন্য মাঝে ঘূর্ণা লেগে ডিগবাজি খায় পক্ষী,
সবাই হাঁকে, "আর না দাদা, গানটা থামাও লক্ষ্মী"।
গানের দাপে আকাশ কাঁপে দালান ফাটে বিলকুল্
ভীষ্মলোচন গাইছে ভীষণ খোস্ মেজাজে দিল্ খুল্।
এক যে ছিল পাগলা ছাগল, এমনি সেটা ওস্তাদ,
গানের তালে শিং বাগিয়ে মারলে গুঁতো পশ্চাৎ।
আর কোথা যায় একটি কথায় গানের মাথায় ডান্ডা
"বাপরে" ব'লে ভীস্মলোচন এক্কেবারে ঠান্ডা।
ঠাস্ ঠাস্ দ্রুম দ্রাম,শুনে লাগে খটকা--
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পট্কা!
শাঁই শাঁই পন্ পন্, ভয়ে কান বন্ধ--
ওই বুঝি ছুটে যায় সে-ফুলের গন্ধ?
হুড়মুড় ধুপধাপ--ওকি শুনি ভাইরে!
দেখ্ছনা হিম পড়ে-- যেও নাকো বাইরে।
চুপ চুপ ঐ শোন্! ঝুপ ঝাপ্ ঝপা-স!
চাঁদ বুঝি ডুবে গেল? গব্ গব্ গবা-স!
খ্যাঁশ্ খ্যাঁশ্ ঘ্যাঁচ্ ঘ্যাঁচ্ , রাত কাটে ঐরে!
দুড়দাড় চুরমার--ঘুম ভাঙে কই রে!
ঘর্ঘর ভন্ ভন্ ঘোরে কত চিন্তা!
কত মন নাচ শোন্--ধেই ধেই ধিন্তা!
ঠুংঠাং ঢংঢং, কত ব্যথা বাজেরে--
ফট্ ফট্ বুক ফাটে তাই মাঝে মাঝে রে!
হৈ হৈ মার্ মার্ "বাপ্ বাপ্" চিৎকার--
মালকোঁচা মারে বুঝি? সরে পড়্ এইবার।
কল করেছেন আজব রকম চন্ডীদাসের খুড়ো-
সবাই শুনে সাবাস্ বলে পাড়ার ছেলে বুড়ো।
খুড়োর যখন অল্প বয়স- বছর খানকে হবে-
উঠ্লো কেঁদে "গুংগা" ব'লে ভীষণ অট্টরবে।
আর তো সবাই "মামা" "গাগা" আবোল তাবোল বকে,
খুড়োর মুখে "গুংগা" শুনে চমকে গেল লোকে।
বল্লে সবাই, "এই ছেলেটা বাঁচলে পরে তবে,
বুদ্ধি জোরে এ সংসারে একটা কিছু হবে।"
সেই খুড়ো আজ কল করেছেন আপন বুদ্ধি বলে,
পাঁচ ঘন্টার রাস্তা যাবে দেড় ঘন্টায় চলে।
দেখে এলাম কলটি অতি সহজ এবং সোজা,
ঘন্টা পাঁচেক ঘাঁটলে পরে আপনি যাবে বোঝা।
বলব কি আর কলের ফিকির, বলতে না পাই ভাষা,
ঘাড়ের সঙ্গে যন্ত্র জুড়ে এক্কেবারে খাসা।
সামনে তাহার খাদ্য ঝোলে যার যে রকম রুচি-
মন্ডা মিঠাই চপ্ কাট লেট্খাজা কিংবা লুচি।
মন বলে তায় "খাব খাব" মুখ চলে যায় তায় খেতে,
মুখের সঙ্গে খাবার ছোটে পাল্লা দিয়ে মেতে।
এমনি করে লোভের টানে খাবার পানে চেয়ে,
উৎসাহেতে হুঁস্ রবে না চলবে কেবল ধেয়ে।
হেসে খেলে দু'দশ যোজন চলবে বিনা ক্লেশে,
খাবার গন্ধে পাগল হ'য়ে জিভের জলে ভেসে।
সবাই বলে সমস্বরে ছেলে জোয়ান বুড়ো,
অতুল কীর্তি রাখল ভবে চন্ডীদাসের খুড়ো।
ওই আমাদের পাগলা জগাই, নিত্যি হেথায় আসে;
আপন মনে গুন্ গুনিয়ে মুচ্কি হাসি হাসে ।
চলতে গিয়ে হঠাৎ যেন ধমক লেগে থামে;
তড়াক্ করে লাফ দিয়ে যায় ডাইনে থেকে বামে।
ভীষন রোখে হাত গুটিয়ে সামলে নিয়ে কোচাঁ ;
"এইয়ো" বলে ক্ষ্যাপার মতো শুন্যে মারে খোচাঁ ।
চেঁচিয়ে বলে ,"ফাদঁ পেতেছ ? জগাই কি তায় পড়ে?
সাত জার্মান, জগাই একা, তবুও জগাই লড়ে।"
উৎসাহেতে গরম হয়ে তিড়িং বিড়িং নাচে,
কখনও যায় সামনে তেড়ে, কখনও যায় পাছে।
এলোপাতাড়ি ছাতার বাড়ি ধুপুস ধাপুস্ কত!
চক্ষু বুজে কায়দা খেলায় চর্কিবাজির মত।
লাফের চোটে হাঁপিয়ে ওঠে গায়েতে ঘাম ঝরে,
দুড়ুম ক'রে মাটির পরে লম্বা হয়ে পড়ে।
হাত পা ছুঁড়ে চেঁচায় খালি চোখ্টি ক'রে ঘোলা,
"জগাই মেলো হঠাৎ খেয়ে কামানের এক গোলা"!
এই না বলে মিনিট খানেক ছট্ফটিয়ে খুব,
মড়ার মত শক্ত হ'য়ে এক্কেবারে চুপ !
তার পরেতে সটান্ বসে চুলকে খানিক মাথা,
পকেট থেকে বার করে তার হিসেব লেখার খাতা।
লিখলে তাতে- "শোনরে জগাই, ভীষন লড়াই হলো
পাঁচ ব্যাটাকে খতম করে জগাই দাদা মোলো।"
বাবুরাম সাপুড়ে,
কোথা যাস্ বাপুরে?
আয় বাবা দেখে যা,
দুটো সাপ রেখে যা!
যে সাপের চোখ্ নেই,
শিং নেই নোখ্ নেই,
ছোটে নাকি হাঁটে না,
কাউকে যে কাটে না,
করে নাকো ফোঁস ফাঁস,
মারে নাকো ঢুঁশ্ ঢাঁশ্,
নেই কোন উৎপাত,
খায় শুধু দুধভাত--
সেই সাপ জ্যাম্ত
গোটা দুই আনত?
তেড়ে মেরে ডাণ্ডা
ক'রে দেই ঠাণ্ডা।
আজগুবি নয়, আজগুবি নয়, সত্যিকারের কথা-
ছায়ার সাথে কুস্তি করে গাত্রে হল ব্যাথা।
ছায়া ধরার ব্যবসা করি, তাও জাননা বুঝি?
রোদের ছায়া, চাঁদের ছায়া, হরেক রকম পুঁজি!
শিশির ভেজা সদ্য ছায়া, সকাল বেলায় তাজা,
গ্রীষ্মকালে শুকনো ছায়া ভীষণ রোদে ভাজা।
চিলগুলো যায় দুপুরে বেলায় আকাশ পথে ঘরে
ফাঁদ ফেলে তার ছায়ার উপর খাঁচায় রাখি পুরে।
কাগের ছায়া বগের ছায়া দেখছি কত ঘেঁটে-
হাল্কা মেঘের পানসে ছায়া তাও দেখ্ছি চেটে।
কেউ জানে না এ সব কথা কেউ বোঝে না কিছু,
কেউ ঘোরে না আমার মত ছায়ার পিছু পিছু।
তোমরা ভাব গাছের ছায়া অমনি লুটায় ভূয়ে,
অমনি শুধু ঘুমায় বুঝি শান্ত মতন শুয়ে;
আসল ব্যাপার জানবে যদি আমার কথা শোনো,
বলছি যা তা সত্যি কথা,সন্দেহ নাই কোনো।
কেউ যবে তার রয় না কাছে ,দেখতে নাহি পায়
গাছের ছায়া ফুটফুটিয়ে এদিক ওদিক চায়।
সেই সময়ে গুড় গুড়িয়ে পিছন হ'তে এসে
ধামায় চেপে ধপাস্ করে ধরবে তারে ঠেসে।
পাৎলা ছায়া ফোকলা ছায়া,ছায়া গভীর কালো-
গাছের চেয়ে গাছের ছায়া সব রকমেই ভালো।
গাছ গাছালি শেকড় বাকল মিথ্যে সবাই গেলে,
বাপরে বলে পালায় ব্যামো ছায়ার ওষুধ খেলে।
নিমের ছায়া ঝিঙের ছায়া তিক্ত ছায়ার পাক,
যেই খাবে ভাই অঘোর ঘুমে ডাকবে তাহার নাক।
চাঁদের আলোয় পেঁপের ছায়া ধরতে যদি পার,
শুঁকালে পরে সর্দিকাশি থাকবে না আর কারো।
আমড়া গাছের নোংরা ছায়া কামড়ে যদি খায়
ল্যাংড়া লোকের ঠ্যাং গজবে সন্দেহ নাই তায়।
আষাঢ় মাসের বাদ্লা দিনে বাঁচতে যদি চাও,
তেঁতুল তলার তপ্ত ছায়া হপ্তা তিনেক খাও।
মৌয়া গাছের মিষ্টি ছায়া ব্লটিং দিয়ে শুষে
ধুয়ে মুছে সাবানেতে রাখছি ঘরে পুষে!
পাক্কা নতুন টাটকা ওষুধ এক্কেবারে দিশি-
দাম করেছি সস্তা বড়, চোদ্দ আনা শিশি।
(যদি) কুমড়োপটাশ নাচে--
খবরদার এসো না কেউ আস্তাবলের কাছে;
চাইবে নাকো ডাইনে বাঁয়ে চাইবে নাকো পাছে;
চার পা তুলে থাকবে ঝুলে হট্টমূলার গাছে!
(যদি) কুমড়োপটাশ কাঁদে--
খবরদার! খবরদার! বসবে না কেউ ছাদে;
উপুড় হয়ে মাচায় শুয়ে লেপ কম্বল কাঁধে;
বেহাগ সুরে গাইবে খালি 'রাধে কৃষ্ণ রাধে'!
(যদি) কুমড়োপটাশ হাসে--
থাকবে খাড়া একটি ঠ্যাঙে রান্নাঘরের পাশে;
ঝাপসা গলায় ফার্সি কবে নিশ্বাসে ফিসফাসে;
তিনটি বেলা উপোস করে থাকবে শুয়ে ঘাসে!
(যদি) কুমড়োপটাশ ছোটে--
সবাই যেন তড়বড়িয়ে জানলা বেয়ে ওঠে;
হুঁকোর জলে আলতা গুলে লাগায় গালে ঠোঁটে;
ভুলেও যেন আকাশপানে তাকায় না কেউ মোটে!
(যদি) কুমড়োপটাশ ডাকে--
সবাই যেন শামলা এঁটে গামলা চড়ে থাকে;
ছেঁচকি শাকের ঘণ্ট বেটে মাথায় মরম মাখে;
শক্ত ইঁটের তপ্ত ঝামা ঘষতে থাকে নাকে!
তুচ্ছ ভেবে এ-সব কথা করছে যারা হেলা,
কুমড়োপটাশ জানতে পেলে বুঝবে তখন ঠেলা।
দেখবে তখন কোন কথাটি কেমন করে ফলে,
আমায় তখন দোষ দিও না, আগেই রাখি বলে।
আরে আরে, ওকি কর প্যালারাম বিশ্বাস?
ফোঁস্ ফোঁস্ অত জোরে ফেলোনাকো নিশ্বাস।
জানোনা কি সে বছর ওপাড়ার ভূতোনাথ,
নিশ্বাস নিতে গিয়ে হয়েছিল কুপোকাৎ?
হাঁপ ছাড় হ্যাঁস্ফ্যাঁস্ ও রকম হাঁ করে-
মুখে যদি ঢুকে বসে পোকা মাছি মাকড়ে?
বিপিনের খুড়ো হয় বুড়ো সেই হল' রায়,
মাছি খেয়ে পাঁচ মাস ভুগেছিল কলেরায়।
তাই বলি- সাবধান! ক'রোনাকো ধুপ্ধাপ্,
টিপি টিপি পায় পায় চলে যাও চুপ্ চাপ্।
চেয়োনাকো আগে পিছে, যেয়োনাকো ডাইনে
সাবধানে বাঁচে লোকে,- এই লেখে আইনে।
পড়েছ ত কথা মালা? কে যেন সে কি করে
পথে যেতে পড়ে গেল পাতকো'র ভিতরে ?
ভালো কথা- আর যেন সকালে কি দুপুরে ,
নেয়োনাকো কোনো দিন ঘোষেদের পুকুরে,
এরকম মোটা দেহে কি যে হবে কোন্ দিন,
কথাটাকে ভেবে দেখ কি রকম সঙ্গিন!
চটো কেন? হয় নয় কে বা জানে পষ্ট,
যদি কিছু হ'য়ে পড়ে পাবে শেষে কষ্ট।
মিছিমিছি ঘ্যান্ ঘ্যান্ কেন কর তক্ক?
শিখেছ জ্যাঠামো খালি, ইঁচরেতে পক্ক ,
মানবে না কোন কথা চলা ফেরা আহারে ,
একদিন টের পাবে ঠেলা কয় কাহারে ।
রমেশের মেঝ মামা সেও ছিল সেয়না,
যত বলি ভালো কথা কানে কিছু নেয়না
শেষকালে একদিন চান্নির বাজারে
প'ড়ে গেল গাড়ি চাপা রাস্তার মাঝারে!
গালভরা হাসিমুখে চালভাজা মুড়ি,
ঝুরঝুরে পড়ো ঘরে থুর থুরে বুড়ী।
কাঁথাভরা ঝুলকালি, মাথাভরা ধলো,
মিট্মিটে ঘোলা চোখ, পিঠখানা কুলো।
কাঁটা দিয়ে আঁটা ঘর- আঠা দিয়ে সেঁটে,
সুতো দিয়ে বেঁধে রাখে থুতু দিয়ে চেটে।
ভর দিতে ভয় হয় ঘর বুঝি পড়ে,
খক্খক্ কাশি দিলে ঠক্ঠক্ নড়ে।
ডাকে যদি ফিরিওলা হাঁকে যদি গাড়ি,
খসে পড়ে কড়িকাঠ ধসে পড়ে বাড়ী।
বাঁকাচোরা ঘরদোর ফাঁকা ফাঁকা কত,
ঝাঁট দিলে ঝ'রে পড়ে কাঠকুটো যত।
ছাদ গুলো ঝুলে পড়ে বাদ্লায় ভিজে,
একা বুড়ি কাঠী গুজে ঠেকা দেয় নিজে।
মেরামত দিন রাত কেরামত ভারি,
থুরথুরে বুড়ী তার ঝুরঝুরে বাড়ী।
প্যাঁচা কয় প্যাঁচানি,
খাসা তোর চ্যাঁচানি!
শুনে শুনে আনমন
নাচে মোর প্রাণমন!
মাজা-গলা চাঁচা সুর
আহ্লাদে ভরপুর!
গলা-চেরা গমকে
গাছ পালা চমকে,
সুরে সুরে কত প্যাঁচ
গিট্কিরি ক্যাঁচ্ ক্যাঁচ্!
যত ভয় যত দুখ
দুরু দুরু ধুক্ ধুক্,
তোর গানে পেঁচি রে
সব ভুলে গেছি রে-
চাঁদ মুখে মিঠে গান
শুনে ঝরে দু'নয়ান।
হাতুড়ে
একবার দেখে যাও ডাক্তারি কেরামৎ-
কাটা ছেঁড়া ভাঙা চেরা চট্পট মেরামৎ
কয়েছেন গুরু মোর, "শোন শোন বৎস,
কাগজের রোগী কেটে আগে কর মক্স"
উৎসাহে কি না হয়? কি না হয় চেষ্টায়?
অভ্যাসে চটপট্ হাত পাকে শেষটায়।
খেটে খুটে জল হ'ল শরীরের রক্ত-
শিখে দেখি বিদ্যেটা নয় কিছু শক্ত।
কাটা ছেঁড়া ঠুক্ ঠাক। কত দেখ যন্ত্র,
ভেঙে চুরে জুড়ে দেই তারও জানি মন্ত্র
চোখ বুজে চটপট বড় বড় মুর্তি,
যত কাটি ঘ্যাঁস্ ঘ্যাঁস্ তত বাড়ে ফুর্তি।
ঠ্যাং কাটা গলা কাটা কত কাটা হস্ত,
শিরিষের আঠা দিয়ে জুড়ে দেয় চোস্ত।
এইবারে বলি তাই, রোগী চাই জ্যান্ত-
ওরে ভোলা, গোটাছয় রোগী ধরে আন্ত!
গেঁটেবাতে ভুগে মরে ও পাড়ার নন্দী,
কিছুতেই সারাবে না এই তার ফন্দি-
একদিন এনে তারে এইখানে ভুলিয়ে,
গেটেঁবাত ঘেঁটে- ঘুঁটে সব দেব ঘুলিয়ে।
কার কানে কট্ কট্ কার নাকে সর্দি,
এস, এস, ভয় কিসে? আমি আছি বদ্যি।
শুয়ে কে রে? ঠ্যাং ভাঙা? ধরে আন্ এখেনে-
স্ক্রুপ্ দিয়ে এঁটে দিব কি রকম দেখে নে।
গলা ফোলা কাঁদ কেন? দাঁতে বুঝি বেদনা?
এস এস ঠুকে দেই আর মিছে কেঁদ না,
এই পাশে গোটা দুই, ওই পাশে তিনটে-
দাঁতগুলো টেনে দেখি কোথা গেল চিমটে?
ছেলে হও, বুড়ো হও, অন্ধ কি পঙ্গু,
মোর কাছে ভেদ নাই, কলেরা কি ডেঙ্গু-
কালাজ্বর, পালাজ্বর, পুরানো কি টাটকা,
হাতুড়ির একঘায়ে একেবারে আট্কা!
বিদঘুটে জানোয়ার কিমাকার কিম্ভুত,
সারাদিন ধ'রে তার শুনি শুধু খুঁৎ খুঁৎ।
মাঠ পারে ঘাট পারে কেঁদে মরে খালি সে,
ঘ্যান্ ঘ্যান আব্দারে ঘন ঘন নালিশে।
এটা চাই সেটা চাই কত তার বায়না-
কি যে চায় তাও ছাই বোঝা কিছু যায়না ।
কোকিলের মত তার কন্ঠেতে সুর চাই,
গলা শুনে আপনার বলে, "উহু, দুর ছাই!"
আকাশেতে উড়ে যেতে পাখিদের মানা নেই-
তাই দেখে মরে কেঁদে- তার কোন ডানা নেই!
হাতিটার কি বাহার দাঁতে আর শুন্ডে-
ও রকম জুরে তার দিতে হবে মুন্ডে!
কাঙ্গারুর লাফ দেখে ভারি তার হিংসে-
ঠ্যাং চাই আজ থেকে ঢ্যাংঢেঙে চিমসে!
সিংহের কেশরের মত তার তেজ কৈ?
পিছে খাসা গোসাপের খাজ কাটা লেজ কৈ?
একলা সে সব হলে মেটে তার প্যাখনা;
যারে পায় তারে বলে, "মোর দশা দেখ্না!"
কেদেঁ কেদেঁ শেষটায়- আষাঢ়ের বাইশে
হল বিনা চেষ্টায় চেয়েছে যা তাই সে।
ভুলে গিয়ে কাঁদাকাটি আহ্লাদে আবেশে
চুপিচুপি একলাটি ব'সে ব'সে ভাবে সে-
লাফ দিয়ে হুশ্ করে হাতি কভু নাচে কি?
কলাগাছ খেলে পরে কাঙ্গারুটা বাঁচে কি ?
ভোঁতামুখে কুহুডাক শুনে লোকে কবে কি?
এই দেহে শুঁড়ো নাক খাপ ছাড়া হবে কি?
"বুড়ো হাতি ওড়ে" ব'লে কেউ যদি গালি দেয় ?
কান টেনে ল্যাজ মলে "দুয়ো" ব'লে তালি দেয়?
কেউ যদি তেড়েমেরে বলে তার সামনেই-
কোথাকার তুই কেরে, নাম নেই ধাম নেই?
জবাব কি দেবে ছাই,আছে কিছু বলবার?
কাচুঁ মাচুঁ বসে তাই ,মনে শুধু তোলপার-
"নই ঘোড়া,নই হাতি, নই সাপ বিচছু
মৌমাছি প্রজাপতি নই আমি কিচছু।
মাছ ব্যাং গাছপাতা জলমাটি ঢেউ নই,
নই জুতা নই ছাতা,আমি তবে কেউ নই!"
আর ছি ছি! রাম রাম! ব'লো না হে ব'লো না-
চলছে যা জুয়াচুরি, নাহি তার তুলনা।
যেই আমি দেই ঘুম টিফিনের আগেতে,
ভয়ানক ক'মে যায় খাবারের ভাগেতে ।
রোজ দেখি খেয়ে গেছে, জানিনেকো কারা সে-
কালকে যা হ'য়ে গেল ডাকাতির বাড়া সে!
পাঁচ খানা কাট্লেট্, লুচি তিন গন্ডা,
গোটা দুই জিবে গজা ,গুটি দুই মন্ডা,
আরো কত ছিল পাতে আলু ভাজা ঘুঙনি-
ঘুম থেকে উঠে দেখি পাতখানা শুন্যি!
তাই আজ ক্ষেপে গেছি- কত আর পারব?
এতদিন স'য়ে স'য়ে এই বারে মারব।
খাড়া আছি সারাদিন হুসিয়ার পাহারা ,
দেখে নেব রোজ রোজ খেয়ে যায় কাহারা।
রামু হও দামু হও, ও পাড়ার ঘোষ বোস-
যেই হও এই বারে থেমে যাবে ফোঁস্ ফোঁস্।
খাটবে না জারিজুরি আঁটবে না মার প্যাঁচ্,
যারে পাব ঘাড়ে ধ'রে কেটে দেব ঘ্যাঁচ ঘ্যাঁচ্
এই দেখ ঢাল নিয়ে খাড়া আছি আড়ালে,
এই বারে টের পাবে মুন্ডুটা বাড়ালে।
রোজ বলি "সাবধান" কানে তবু যায় না?
ঠেলাখানা বুঝবি ত এইবারে আয় না!
কেউ কি জান সদাই কেন বোম্বাগড়ের রাজা-
ছবির ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখে আমসত্ত্ব ভাজা?
রানীর মাথায় অষ্টপ্রহর কেন বালিশ বাঁধা?
পাঁউরুটিতে পেরেক ঠোকে কেন রানীর দাদা?
কেন সেথায় সর্দি হলে ডিগবাজি খায় লোকে?
জোছ্না রাতে সবাই কেন আলতা মাথায় চোখে?
ওস্তাদেরা লেপ মুড়ি দেয় কেন মাথায় ঘাড়ে?
টাকের পরে পন্ডিতেরা ডাকের টিকিট মারে।
রাত্রে কেন ট্যাঁক্ঘড়িটা ডুবিয়ে রাখে ঘিয়ে।
কেন রাজার বিছ্না পাতে শিরীষ কাগজ দিয়ে?
সভায় কেন চেঁচায় রাজা "হুক্কা হুয়া" বলে?
মন্ত্রী কেন কলসী বাজায় বসে রাজার কোলে?
সিংহাসনে ঝোলায় কেন ভাঙা বোতল শিশি?
কুমড়ো নিয়ে ক্রিকেট খেলে কেন রাজার পিসী?
রাজার খুড়ো নাচেন কেন হুঁকোর মালা পরে?
এমন কেন ঘটছে তা কেউ বলতে পার মোরে?
রোদে রাঙা ইঁটের পাঁজা, তার উপরে বসল রাজা-
ঠোঙাভরা বাদাম ভাজা খাচ্ছে কিন্তু গিলছে না।
গায়ে আঁটা গরম জামা, পুড়ে পিঠ হচ্ছে ঝামা;
রাজা বলে, "বৃষ্টি নামা- নইলে কিচ্ছু মিলছে না"।
থাকে সারা দুপুর ধ'রে, ব'সে ব'সে চুপটি করে,
হাঁড়িপানা মুখটি ক'রে আঁকড়ে ধরে শ্লেটটুকু;
ঘেমে ঘেমে উঠছে ভিজে, ভ্যাবাচ্যাকা একলা নিজে,
হিজিবিজি লিখ্ছে কি যে বুঝ্ছে না কেউ একটুকু।
ঝাঁঝা রোদ আকাশ জুড়ে, মাথাটার ঝাঝ্রা ফুঁড়ে,
মগজেতে নাচ্ছে ঘুরে রক্তগুলো ঝ্ন্র ঝন্:
ঠাঠা-পড়া দুপুর দিনে, রাজা বলে "আর বাঁচিনে,
ছুটে আন্ বরফ কিনে- ক'চ্ছে কেমন গা ছন্ছন্।"
সবে বলে, "হায় কি হল! রাজা বুঝি ভেবেই মোলো।
ওগো রাজা মুখ্টি খোল- কওনা ইহার কারণ কি?
রাঙামুখ পান্সে যেন, তেলে ভাজা আম্সি হেন,
রাজা এত ঘাম্ছে কেন- শুনতে মোদের বারণ কি"?
রাজা বলে, "কেইবা শোনে যে কথাটা ঘুরছে মনে,
মগজের নানান্ কোণে- আন্ছি টেনে বাইরে তায়;
সে কথাটি বলছি শোন, যতই ভাব যতই গোন,
নাহি তার জবাব কোন কুলকিনারা নাইরে হায়।
লেখা আছে পুথিঁর পাতে, 'নেড়া যায় বেলতলাতে',
নাহি কোনো সন্ধ তাতে - কিন্তু প্রশ্ন ক'বার যায়?
এ কথাটা এদ্দিনেও পারে নিকো বুঝতে কেও,
লেখে নিকো পুস্তকেও, দিচ্ছে না কেউ জবাব তায়।
লাখোবার যায় যদি সে, যাওয়া তার ঠেকায় কিসে?
ভেবে তাই পাইনে দিশে নাই কি কিচ্ছু উপায় তার?"
এ কথাটা যেম্মি বলা, রোগা এক ভিস্তিও'লা
টিপ্ ক'রে বাড়িয়ে গলা প্রণাম করল দু পায় তাঁর।
হেসে বলে, "আজ্ঞে সে কি?, এতে আর গোল হবে কি?
নেড়াকে তো নিত্যি দেখি আপন চোখে পরিষ্কার-
আমাদেরি বেলতলা যে, নেড়া সেথা খেলতে আসে
হরে দরে হয়তো মাসে নিদেন পক্ষে পঁচিশ বার"।
আরে আরে জগমোহন- এস ,এস,এস-
বলতে পার কোথায় থাকে আদ্যনাথের মেশো?
আদ্যনাথের নাম শোননি? খগেনকে তো চেনো?
শ্যাম বাগচি খগেনেরই মামাশ্বশুর জেনো।
শ্যামের জামাই কেষ্টমোহন, তার যে বাড়ীওলা-
(কি যেন নাম ভুলে গেছি), তারই মামার শালা;
তারই পিশের খড়তুতো ভাই আদ্যনাথের মেশো-
লক্ষী দাদা ,ঠিকানা তার একটু জেনে এসো।
ঠিকানা চাও? বলছি শোন; আমড়াতলার মোড়ে
তিন-মুখো তিন রাস্তা গেছে তারি একটা ধ'রে,
চলবে সিধে নাক বরাবর, ডান দিকে চোখ রেখে;
চলতে চলতে দেখবে শেষে রাস্তা গেছে বেঁকে।
দেখবে সেথায় ডাইনে বায়ে পথ গিয়াছে কত,
তারি ভিতর ঘুরবে খানিক গোলকধাঁধাঁর মত।
তারপরেতে হঠাৎ বেঁকে ডাইনে মোচর মেরে ,
ফিরবে আবার বাঁয়ের দিকে তিনটে গলি ছেড়ে।
তবেই আবার পড়বে এসে আমড়া তলার মোড়ে-
তারপরে যাও যেথায় খুশি- জ্বালিয়ে নাকো মোরে।
ও শ্যামাদাস! আয় ত দেখি ব'স্ তো দেখি এখেনে,
সেই কথাটা বুঝিয়ে দেব পাঁচ মিনিটে দেখে নে।
জ্বর হয়েছে? মিথ্যে কথা! ওসব তোদের চালাকি-
এই যে বাবা চেঁচাচ্ছিলে, শুনতে পাইনি? কালা কি?
মামার ব্যামো? বদ্যি ডাকবি? ডাকিস না হয় বিকেলে;
না হয় আমি বাৎলে দেব বাঁচ্বে মামা কি খেলে।
আজকে তোকে সেই কথাটা বোঝাবই বোঝাব-
না বুঝবি ত মগজে তোর গজাল মেরে গোঁজাব।
কোন্ কথাটা? তাও ভুলেছিস্? ছেড়ে দিছিস্ হাওয়াতে?
কি বলছিলেম পরশু রাতে বিষ্টু বোসের দাওয়াতে?
ভুলিস্নি ত বেশ করেছিস, আবার শুনলে ক্ষেতি কি?
বড় যে তুই পালিয়ে বেড়াস্, মাড়াসনে যে এদিক্ই!
বলছি দাঁড়া, ব্যস্ত কেন? বোস্ তাহলে নিচুতেই-
আজকালের এই ছোক্রা গুলোর তর্ সয় না কিছুতেই।
আবার দেখ! বসলি কেন? বই গুলো আন্ নামিয়ে-
তুই থাক্তে মুটের বোঝা বইতে যাব আমি এ?
সাবধানে আন, ধরছি দাঁড়া- সেই আমাকেই ঘামালি-
এই খেয়েছে! কোন্ আক্কেলে শব্দকোষটা নামালি?
ঢের হয়েছে! আয় দেখি তুই বোস্ ত দেখি এদিকে-
ওরে গোপাল, গোটা কয়েক পান দিতে বল্ খেঁদিকে।
বলছিলাম কি, বস্তুপিন্ড সূক্ষ্ম হতে স্থূলেতে,
অর্থাৎ কিনা লাগছে ঠেলা পঞ্চভূতের মূলেতে-
গোড়ায় তবে দেখতে হবে কোত্থেকে আর কি ক'রে,
রস জমে এই প্রপঞ্চময় বিশ্বতরুর শিকড়ে।
অর্থাৎ কিনা, এই মনে কর্ রোদ পড়েছে ঘাসেতে,
এই মনে কর্, চাঁদের আলো পড়লো তারি পাশেতে-
আবার দেখ! এরই মধ্যে হাই তোলবার মানে কি?
আকাশ পানে তাকাস্ খালি, যাচ্ছে কথা কানে কি?
কি বল্লি তুই? এ সব শুধু আবোল তাবোল বকুনি?
বুঝতে হলে মগজ লাগে, বলেছিলাম তখুনি।
মগজভরা গোবর তোদের হচ্ছে ঘুঁটে শুকিয়ে,
যায় কি দেওয়া কোন কথা তার ভিতরে ঢুকিয়ে?-
ও শ্যামাদাস! উঠলি কেন? কেবল যে চাস্ পালাতে!
না শুনবি ত মিথ্যে সবাই আসিস্ কেন জ্বালাতে?
তত্ত্বকথা যায় না কানে যতই মরি চেঁচিয়ে-
ইচ্ছে করে ডান্পিটেদের কান মলে দি পেঁচিয়ে।
শিবঠাকুরের আপন দেশে ,
আইন কানুন সর্বনেশে!
কেউ যদি যায় পিছলে প'ড়ে,
প্যায়দা এসে পাক্ড়ে ধরে ,
কাজির কাছে হয় বিচার-
একুশ টাকা দন্ড তার।।
সেথায় সন্ধে ছটার আগে
হাঁচতে হলে টিকিট লাগে
হাঁচলে পরে বিন্ টিকিটে
দম্দমাদম্ লাগায় পিঠে ,
কোটাল এসে নস্যি ঝাড়ে-
একুশ দফা হাচিয়ে মারে।।
কারুর যদি দাতটি নড়ে,
চার্টি টাকা মাশুল ধরে ,
কারুর যদি গোঁফ গজায় ,
একশো আনা ট্যাক্সো চায়-
খুঁচিয়ে পিঠে গুঁজিয়ে ঘাড়,
সেলাম ঠোকায় একুশ বার।।
চলতে গিয়ে কেউ যদি চায়
এদিক্ ওদিক্ ডাইনে বাঁয়,
রাজার কাছে খবর ছোটে,
পল্টনেরা লাফিয়ে ওঠে ,
দুপুরে রোদে ঘামিয়ে তায়-
একুশ হাতা জল গেলায়।।
যে সব লোকে পদ্য লেখে,
তাদের ধরে খাঁচায় রেখে,
কানের কাছে নানান্ সুরে
নামতা শোনায় একশো উড়ে,
সামনে রেখে মুদীর খাতা-
হিসেব কষায় একুশ পাতা।।
হঠাৎ সেথায় রাত দুপুরে
নাক ডাকালে ঘুমের ঘোরে,
অম্নি তেড়ে মাথায় ঘষে,
গোবর গুলে বেলের কষে,
একুশটি পাক ঘুরিয়ে তাকে-
একুশ ঘন্টা ঝুলিয়ে রাখে।।
হুঁকোমুখো হ্যাংলা বাড়ী তার বাঙলা
মুখে তার হাসি নাই ,দেখেছ?
নাই তার মানে কি? কেউ তাহা জানে কি?
কেউ কভু তার কাছে থেকেছ?
শ্যামাদাস মামা তার আপিঙের থানাদার ,
আর তার কেউ নাই এছাড়া-
তাই বুঝি একা সে মুখ খানা ফ্যাকাশে,
ব'সে আছে কাঁদ কাঁদ বেচারা?
থ্প থ্প পায়ে সে নাচত যে আয়েসে,
গাল ভরা ছিল তার ফুর্তি,
গাইত সে সারাদিন "সারে গামা টিম্ টিম্ ,
আহ্লাদে গদ-গদ মূর্তি!
এই তো সে দুপু'রে বসে ওই উপরে,
খাচ্ছিল কাঁচকলা চটকে-
ওর মাঝে হল কি? মামা তার মোলো কি?
অথবা কি ঠ্যাং গেল মটকে?
হুঁকো মুখো হেঁকে কয়, আরে দূর, তা তো নয়,
দেখ্ছ না কি রকম চিন্তা?
মাছি মারা ফন্দি এ যত ভাবি মন দিয়ে-
ভেবে ভেবে কেটে যায় দিনটা।
বসে যদি ডাইনে, লেখে মোর আইনে-
এই ল্যাজে মাছি মারি এস্ত;
বামে যদি বসে তাও, নাহি আমি পিছপাও,
এই ল্যাজে আছে তার অস্ত্র!
যদি দেখি কোন পাজি বসে ঠিক মাঝামাঝি,
কি যে করি ভেবে নাহি পাইরে-
ভেবে দেখি একি দায়, কোন্ ল্যাজে মারি তায়
দুটি বই ল্যাজ মোর নাই রে!
আয় তোর মুন্ডুটা দেখি, আয় দেখি "ফুটোস্কোপ" দিয়ে,
দেখি কত ভেজালের মেকি আছে তোর মগজের ঘিয়ে।
কোন্ দিকে বুদ্ধিটা খোলে, কোন্ দিকে থেকে যায় চাপা;
কতখানি ভস্ ভস্ ঘিলু, কত খানি ঠক্ ঠকে ফাঁপা।
মন তোর কোন্ দেশে থাকে, কেন তুই ভুলে যাস্ কথা-
আয় দেখি কোন্ ফাঁক দিয়ে, মগজেতে ফুটো তোর কোথা।
টোল-খাওয়া ছাতাপড়া মাথা, ফাটামত মনে হয় যেন,
আয় দেখি বিশ্লেষ ক'রে- চোপ্ রও ভয় পাস কেন?
কাৎ হয়ে কান ধ'রে দাঁড়া, জিভখানা উল্টিয়ে দেখা,
ভালো ক'রে বুঝে শুনে দেখি- বিজ্ঞানে যে রকম লেখা।
মুন্ডুতে ম্যাগনেট ফেলে, বাশঁ দিয়ে "রিফ্লেকট" ক'রে,
ইট দিয়ে ভেলসিটি ক'ষে, দেখি মাথা ঘোরে কি না ঘোরে।
"হ্যাঁরে হ্যাঁরে তুই নাকি কাল, সাদাকে বলছিলি লাল?
(আর) সেদিন নাকি রাত্রি জুড়ে, নাক ডেকেছিস্ বিশ্রী সুরে?
(আর) তোদের পোষা বেড়ালগুলো, শুন্ছি নাকি বেজায় হুলো?
(আর) এই যে শুনি তোদের বাড়ি, কেউ নাকি রাখে না দাড়ি?
ক্যান্ রে ব্যাটা ইসটুপিড? ঠেঙিয়ে তোরে করব ঢিট্!"
"চোপরাও তুম্ স্পিকটি নট্, মার্ব রেগে পটাপট্-
ফের যদি ট্যারাবি চোখ, কিম্বা আবার কর্বি রোখ,
কিম্বা যদি অম্নি ক'রে, মিথ্যেমিথ্যি চ্যাঁচাস জোরে-
আই ডোন্ট কেয়ার কানাকড়ি- জানিস্ আমি স্যান্ডো করি?"
"ফের লাফাচ্ছিস্! অল্রাইট, কামেন্ ফাইট ! কামেন্ ফাইট!"
"ঘুঘু দেখেছ, ফাঁদ দেখনি, টেরটা পাবে আজ এখনি!
আজকে যদি থাক্ত মামা, পিটিয়ে তোমায় করত ধামা।"
"আরে! আরে! মার্বি নাকি? দাঁড়া একটা পুলিশ ডাকি!"
"হাঁহাঁহাঁহাঁ! রাগ করো না, করতে চাও কি তাই বল না!"
"হাঁ হাঁ তাতো সত্যি বটেই, আমি তো চটিনি মোটেই!
মিথ্যে কেন লড়তে যাবি? ভেরি- ভেরি সরি মশলা খাবি?"
"শেক্হ্যান্ড আর দাদা বল, সব শোধ বোধ ঘরে চল।"
"ডোন্ট পরোয়া অল্ রাইট্, হাউ ডু য়ু ডু গুড্ নাইট।"
সব লিখেছে এই কেতাবে দুনিয়ার সব খবর যত,
সরকারী সব আফিসখানার কোন্ সাহেবের কদর কত।
কেমন ক'রে চাটনি বানায়, কেমন ক'রে পোলাও করে,
হরেক্ রকম মুষ্টিযোগের বিধান লিখছে ফলাও ক'রে।
সাবান কালি দাঁতের মাজন বানাবার সব কায়দা কেতা,
পূজা পার্বণ তিথির হিসাব শ্রাদ্ধবিধি লিখছে হেতা।
সব লিখেছে, কেবল দেখ পাচ্ছিনাকো লেখা কোথায়--
পাগলা ষাঁড়ে কর্লে তাড়া কেমন ক'রে ঠেকাব তায়!
বাপ্রে কি ডানপিটে ছেলে!-
কোন দিন ফাঁসি যাবে নয় যাবে জেলে।
একটা সে ভুত সেজে আঠা মেখে মুখে,
ঠাঁই ঠাই শিশি ভাঙে শ্লেট দিয়ে ঠুকে।
অন্যটা হামা দিয়ে আলমারি চড়ে,
খাট থেকে রাগ ক'রে দুম্দাম্ পড়ে।
বাপরে কি ডানপিটে ছেলে!-
শিলনোড়া খেতে চায় দুধভাত ফেলে!
একটার দাঁত নেই, জিভ দিয়ে ঘষে,
একমনে মোমবাতি দেশলাই চোষে!
আরজন ঘরময় নীল কালি গুলে,
কপ্ কপ্ মাছি ধরে মুখে দেয় তুলে!
বাপরে কি ডানপিটে ছেলে!-
খুন হ'ত টম্ চাচা ওই রুটি খেলে!
সন্দেহে শুঁকে বুড়ো মুখে নাহি তোলে,
রেগে তাই দুই ভাই ফোঁস্ ফোঁস্ ফোলে!
নেড়াচুল খাড়া হয়ে রাঙা হয় রাগে,
বাপ্ বাপ্ ব'লে চাচা লাফ দিয়ে ভাগে।
পরশু রাতে পষ্ট চোখে দেখনু বিনা চশমাতে,
পান্তভুতের জ্যান্ত ছানা করছে খেলা জোছ্নাতে।
কচ্ছে খেলা মায়ের কোলে হাত পা নেড়ে উল্লাসে,
আহাদেতে ধুপ্ধুপিয়ে কচ্ছে কেমন হল্লা সে।
শুন্তে পেলাম ভুতের মায়ের মুচ্কি হাসি কট্কটে-
দেখছে নেড়ে ঝুণ্টি ধ'রে বাচ্চা কেমন চট্পটে।
উঠছে তাদের হাসির হানা কাষ্ঠ সুরে ডাক্ ছেড়ে,
খ্যাঁশ খ্যাঁশানি শব্দে যেমন করাৎ দিয়ে কাঠ চেরে!
যেমন খুশি মার্ছে ঘুঁষি দিচ্ছে কষে কানমলা,
আদর ক'রে আছাড় মেরে শুন্যে ঝোলে চ্যাং দোলা।
বল্ছে আবার, "আয়রে আমার নোংরামুখো সুঁট্কো রে,
দেখ্ না ফিরে প্যাখ্না ধরে হুতোম-হাসি মুখ ক'রে !
ওরে আমার বাঁদর নাচন আদর গেলা কোঁৎকা রে!
অন্ধবনের গন্ধ-গোকুল, ওরে আমার হোঁৎকা রে!
ওরে আমার বাদলা রোদে জষ্ঠি মাসের বিষ্টিরে।
ওরে আমার হামান ছেচা যষ্টিমধুর মিষ্টিরে।
ওরে আমার রান্না হাঁড়ির কান্না হাসির ফোড়নদার,
ওরে আমার জোছনা হাওয়ার স্বপ্নঘোড়ার চড়নদার।
ওরে আমার গোব্রাগণেশ ময়দাঠাসা নাদুসরে,
ছিঁচকাঁদুনে ফোক্লা মানিক ফের যদি তুই কাঁদিস্রে-"
এই না ব'লে যেই মেরেছে কাদার চাপ্টি ফট্ করে,
কোথায় বা কি ভূতের ফাঁকি - মিলিয়ে গেল চট্ ক'রে!
ছুট্ছে মোটর ঘটর্ ঘরটর্ ছুট্ছে গাড়ী জুড়ি;
ছুট্ছে লোকে নানান্ ঝোকে করছে হুড়োহুড়ি ;
ছুট্ছে কত ক্ষ্যপার মত পড়্ছে কত চাপা-
সাহেব মেম থম্কে থেমে বলছে "মামা! পাপা!"
- আমরা তবু তবলা ঠুকে গাচ্ছি কেমন তেড়ে।
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম! দেড়ে দেড়ে দেড়ে!"
বর্ষাকালের বৃষ্টিবাদল রাস্তা জুড়ে কাদা,
ঠান্ডা রাতে সর্দিবাতে মরবি কেন দাদা?
হোক্ না সকাল হোক্ না বিকেল হোক্ না দুপুর বেলা,
থাক না তোমার আফিস যাওয়া থাক্ না কাজের ঠেলা-
এই দেখ না চাঁদ্নি রাতের গান এনেছি কেড়ে,
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম্ ! দেড়ে দেড়ে দেড়ে!"
মুখ্যু যারা হচেছ সারা পড়্ছে ব'সে একা ,
কেউ বা দেখ কাঁচুর মাচুর কেউ বা ভ্যাবাচ্যাকা;
কেউ বা ভেবে হদ্দ হল, মুখটি যেন কালি ;
কেউ বা বসে বোকার মত মুন্ডু নাড়ে খালি।
তার চেয়ে ভাই, ভাবনা ভুলে গাও না গলা ছেড়ে,
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম্ !দেড়ে দেড়ে দেড়ে!"
বেজার হয়ে যে যার মত কর্ছ সময় নষ্ট-
হাট্ছ কত খাট্ছ কত পাচছ কত কষ্ট!
আসল কথা বুঝছ না যে, করছ না যে চিন্তা,
শুনছ না যে গানের মাঝে তব্লা বাজে ধিনতা?
পাল্লা ধ'রে গায়ের জোরে গিট্কিরি দাও ঝেড়ে,
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম্ !দেড়ে দেড়ে দেড়ে!"