কুবের পুরীর রহস্য Kuber purir Rohoshyo by হেমেন্দ্রকুমার রায় Hemendra Kumar Roy, chapter name মূর্তিমান বিপদের জনতা

মূর্তিমান বিপদের জনতা

এখানে ফুল ফোটে না, কিন্তু চাঁদ ওঠে। আর সে চাদ বোধহয় বাংলা দেশের চাঁদের চেয়ে টের বেশি ফরসা। একই চাদ ওঠে সব দেশে, কিন্তু সব দেশে তার বাহার একরকম নয়।

যাঁরা ভাবছেন বনভূমি নেই বলে চাঁদের শোভা এখানে কম, তাদের আমি মত বদলাতে বলি। প্রকৃতির সমস্তটাই শোভাময়, দেখার মতো দেখতে পারলে। গভীর অন্ধকার ভরা অরণ্য, সীমাহীন ধু-ধু মরুভূমি, কূলহারা নীল সমুদ্র, অনুর্বর কঠিন পর্বত, আবার ছোট্ট নদী বা নিঝরিণী ও একরত্তি গাছের চারা পর্যন্ত যা কিছু আমরা দেখি, প্রত্যেকেই আপন আপন রূপে অপরূপ হয়ে ওঠে।

পূর্ণিমার চন্দ্রলেখা যখন তুষারভূষণ হিমালয়ের শিখরে শিখরে স্বপ্নের আলপনা এঁকে দেয়, তখন তার অপূর্ব বাংলা দেশের কেউ দেখতে পায় না। পাহাড়ে পাহাড়ে বিপুল আলো-ছায়ার কী বিচিত্র মৌন অভিনয়! বনরাজ্যে আলো-ছায়া জীবন্ত রূপে নৃত্য করে, কিন্তু এখানে তারা এই হিমালয়ের মতোই চিরস্থির। যোগী-ঋষিরা তাই বুঝি এই স্থিরতার অন্তঃপুরে এসে ধ্যানধারণায় মগ্ন হয়ে অকম্পিত দীপশিখার মতো বসে থাকতে ভালোবাসেন।

স্থিরতার সঙ্গে মিলেছে এখানে নির্জনতা ও নিস্তব্ধতা।

পৃথিবী যে এত সাড়াহীন হতে পারে, সেটা ভাবতেই মনে জাগে পরম বিস্ময়! নিজেদের শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দও এখানে এত উচ্চ বলে মনে হচ্ছে যে, মাঝে মাঝে নিজেরাই চমকে-চমকে উঠছি!

এই চন্দ্রকরোজ্জ্বল স্থিরতা, নির্জনতা ও নিস্তব্ধতার ভিতর দিয়ে আমরা অগ্রসর হয়েছি হাড়ভাঙা শীতে কাঁপতে কাঁপতে। পূর্ণিমার কিরণ এখানে তুষার-শুভ্রতায় প্রতিবিম্বিত হয়ে দ্বিগুণ উজ্জ্বল আলোক সৃষ্টি করেছে।

কুমার বললে, চড়াইয়ের উপরে খানিকটা উঠলেই আমাদের দেহ গরম হয়ে শীত কমিয়ে দেবে।

কিন্তু আমার কান তখন কুমারের কথা শুনলেও আমার চোখ আকৃষ্ট হয়েছিল পথের একটি জিনিসের দিকে। জিনিসটি সাদা, হাওয়ায় নড়ছিল বলেই দেখতে পেলুম!

দু পা এগিয়ে গিয়ে দেখি, একখানা শৌখিন রুমাল!

হিমালয়ের আঠারো-উনিশ হাজার ফুট উপরে অসভ্য তিব্বতিদের দেশে এমন একখানা শৌখিন রুমাল দেখে চোখ আমার চমকে উঠল! হেঁট হয়ে তখনই সেখানা পথ থেকে কুড়িয়ে নিলুম।

বিমল বললে, ওটা কী দিলীপ?

রুমাল।

বিমল কিছুমাত্র বিস্মিত না হয়ে বললে, ‘বোধহয় কোনও পথিকের পকেট থেকে পড়ে গেছে।

রুমালখানা একমনে পরীক্ষা করতে করতে আমি বললুম, তাই হবে। কিন্তু এই পথিকটি খুব শৌখিন। সে বিলিতি রুমাল ব্যবহার করে, আর তাতে বকুলের এসেন্স মাখায়! তিব্বতিরা এত বাবু হয়েছে বলে জানতুম না! রুমালের কোনে বাংলাতে কার নামের একটা প্রথম অক্ষরও আছে দেখছি!

ততক্ষণে বিমল ও কুমার তাড়াতাড়ি আমার দুই পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।

দিলীপ, কী বলছ!—বলেই বিমল রুমালখানা আমার হাত থেকে ফস করে টেনে নিলে।

কুমার সাগ্রহে জিজ্ঞাসা করলে, রুমালের কোণে কী অক্ষর আছে বিমল?

ভ।

ভ!

কিছুক্ষণ আমরা সকলেই স্তম্ভিত ও নির্বাক হয়ে রইলুম! বোধহয় আমাদের প্রত্যেকেরই বুকের ভিতরে তখন ঝড় বইছিল!

সর্বপ্রথমে কথা কইলে বিমল। একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বললে, এই ভ’ হচ্ছে ভয়াবহ। অর্থাৎ ভ’ অর্থে এখানে ভৈরবকেই বুঝতে হবে। আর কোনও বাঙালি, এখন মানস সরোবরের পথে এলে সে-খবর আগেই আমাদের কানে উঠত। তাহলে বরং ওই ভ’কে ভীমচন্দ্র বলে সন্দেহ করা চলত। এখন এইটেই বুঝতে হবে যে, আমরা যখন একচক্ষু হরিণের মতো ভৈরবের ভাবনা ভুলে নিজেদের সাফল্যে পুলকিত হয়ে ধীরে-সুস্থে ভ্রমণ করছিলুম, ভৈরব তখন আবার আমাদের ফাঁকি দিয়ে দ্রুতপদে রাবণ হ্রদের দিকে এগিয়ে গেছে!

কুমার বললে, কারাগার থেকে সে কবে মুক্তি পেলে?

ভগবান জানেন, তবে রুমালখানা নিশ্চয়ই এখানে বেশিক্ষণ পড়ে নেই, খুব সম্ভব আজকেই কিছুক্ষণ আগে পকেট থেকে কোনও গতিকে পড়ে গেছে। কারণ কালকের সারারাত শিশিরে ভিজলে, আর আজকে সারাদিন রোদে পুড়লে রুমালে এসেন্সের গন্ধ নিশ্চয়ই উবে যেত! দিলীপ, এই রুমাল আজ খবরের কাগজের মতো সব খবরই আমাদের জানিয়ে দিলে। কিন্তু এখনও হয়তো সময় আছে, এখনও হয়তো যবনিকা পড়বার আগেই আমরা যথাস্থানে গিয়ে হাজির হতে পারব,—অগ্রসর হও, অগ্রসর হও! মানুষ আশার দাস—আশার শেষ নেই।

আমার পা আর এগুতে চাইছিল না! মানুষের আশার শেষ নেই বটে, কিন্তু এ আশা যেন আলেয়ার মতো আমাদের অন্ধকার থেকে গাঢ়তর অন্ধকারে টেনে নিয়ে যাচ্ছে, অথচ কখনও নাগালের ভিতরে আসছে না পূর্ণতাকে নিয়ে। কিন্তু এখনও আমরা যেতে চাই কোথায়? বার বার দুর্ভাগ্যকে এড়িয়ে অনেকটা যখন নিশ্চিন্ত হয়েছিলুম, তখন হঠাৎ স্থির-সমুদ্রের টাইফুনের চেয়েও ভয়ঙ্কর হয়ে এই রুমালখানা আবির্ভূত হল! তুচ্ছ একখানা রুমাল! সময়বিশেষে তারও দাম কত বেশি!

বিমল বললে, দিলীপ, তোমার মুখ দেখলে যে প্যাঁচারাও আশ্চর্য হবে! কীসের এত ভাবনা? দেখতে পাচ্ছ না, এই রুমালখানা আমাদের চোখের সামনে ভগবানের অনুগ্রহের পতাকার মতো এসে পড়েছে? এ যে আমাদের ঘুমন্ত চোখকে জাগিয়ে বলতে চায়—ভয় নেই বন্ধুগণ! সর্বশেষের ঘণ্টা বাজাবার আগেই আমি তোমাদের সাবধান করে দিতে এসেছি! বুঝেছ দিলীপ, গুপ্তধন যদি ভৈরবের হাতের মুঠোর ভিতরে গিয়ে ঢোকে, তাহলেও সে নিজে এখনও আমাদেরই হাতের মুঠোর ভিতরে থাকবে! যখন আগে থাকতে খবর পেয়েছি, তখন সে কোথায় পালাবে? এ হচ্ছে প্রায় অরাজক দেশ, তাকে ধরতে গেলে কোনও সভ্য আইন আমাদের বাধা দিতে পারবে না!

কুমার কললে, এতক্ষণ ভৈরব ছিল না, আমাদের এই যাত্রাকে যেন লবণহীন তরকারির মতো বিস্বাদ লাগছিল! ভৈরব এসে ব্যাপারটাকে আবার জমিয়ে তুললে! দিলীপ, এইবারেই তো আসল খেলা শুরু হল!

এই দুটি অপূর্ব যুবকের প্রচণ্ড উৎসাহের ধাক্কায় সমস্ত নিরাশাই যেন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। ধীরে ধীরে আবার আমি চাঙ্গা হয়ে উঠলুম।

...আমরা গুরলার চড়াই অবলম্বন করে উপরে উঠছি। সেখানকার ঘুমন্ত নীরবতা আমাদের পায়ের ও হাতের লাঠির শব্দে যেন সবিস্ময়ে জেগে চমকে চমকে উঠতে লাগল! মাঝে মাঝে আমাদের পা লেগে গড়ানে পথ দিয়ে রঙিন নুড়িগুলো খড়বড় খড়বড় করে গড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে। আমার মনে হল সে যেন স্তব্ধতার হাসির শব্দ!

চাঁদের আলোয় চারিদিক ধবধব করছে। পথ দেখে চলতে—অর্থাৎ উঠতে আমাদের কোনওই কষ্ট হচ্ছে না! অত্যন্ত লঘু বাতাসে শ্বাস নিতে বেগ পাচ্ছি। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, চন্দ্রালোকের সমুদ্রেই ডুবে যেন আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে! চাদের আলো, চাদের আলো, চাদের আলো, কোথাও তা তন্দ্রাচ্ছন্ন, কোথাও তা তুষারের সঙ্গে এক হয়ে মিলিয়ে গেছে, কোথাও তা হিরার কণার মতো জুলে জুলে উঠছে, কোথাও তা ছায়াময় হয়ে যেন আঁধারকে খুঁজছে!

আমি যখন নিজের মনে চাদের আলো নিয়েই মেতে আছি, তখন কুমার হঠাৎ চুপিচুপি বললে, “আচ্ছা বিমল, তোমার মনে কি কোনও অস্বস্তি জাগছে না?

এই আলোকময় স্তব্ধতার শান্তির মধ্যে কুমারের কথাগুলো কেমন বেসুরো শোনাল! যেখানে জনপ্রাণী নেই, কোনও গোলমাল নেই, সেখানে আবার অস্বস্তি কীসের?

কিন্তু কমারের কথা শুনে বুকের কাছটা তব ছাঁৎ করে উঠল। একবার চারিদিকে সন্দেহপর্ণ দৃষ্টিপাত করলুম, কিন্তু ঘুমন্ত চন্দ্রালোকের স্বপ্নজগতে হিমালয়ের ধ্যানমূর্তি ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলুম না!

বিমল প্রথমে চুপ করে রইল। অল্পক্ষণ পরে বললে, কুমার, তোমার কি অস্বস্তি হচ্ছে?

হ্যাঁ ভাই, হচ্ছে।

কী অস্বস্তি বলো দেখি?

মনে হচ্ছে এই পাহাড়ের উপরে যেন আমরা ছাড়াও আরও অনেক লোক আছে।

আর কিছু?

যেন তারা আমাদের প্রত্যেক ভাবভঙ্গি লক্ষ করছে! যেন অনেকগুলো হিসকুটে চোখ আমাদের পানে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে!

কুমার বলে কী! ভাবলুম, বিমল বোধ হয় তার অকারণ ভয় দেখে এখনই ঠাট্টা শুরু করবে। কিন্তু সে ঠাট্টা করলে না! পিঠ থেকে নিজের বন্দুকটা নামিয়ে একবার পরীক্ষা করলে। তারপর ধীরে ধীরে বললে, কুমার, আমারও মনের অবস্থা অনেকটা তোমারই মতো। কেবল তোমার আর আমার নয়, বাঘার দিকে তাকিয়ে দ্যাখো! ও চলতে চলতে হঠাৎ থেমে থেমে দাঁড়াচ্ছে, আর কান খাড়া করে যেন কী শোনবার চেষ্টা করছে।

ফিরে চেয়ে দেখলুম, ঠিক সেই মুহূর্তেই বাঘা দু-কান খাড়া করে পাহাড়ের উপরদিকে তাকিয়ে আছে।

চাঁদের আলোর কথা তখনই মন থেকে লুপ্ত হয়ে গেল! খালি চাদের আলোই দেখছি একচক্ষু হরিণের মতো! কিন্তু ওই যে পাহাড়ের আশেপাশে শত শত কালো ছায়া অমাবস্যার রহস্যকে ধরে রাখবার চেষ্টা করছে, তীক্ষ্ণদৃষ্টিও যাদের ভিতরে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসে, ওগুলোর মধ্যে কি কোনও বিভীষিকা লুকিয়ে থাকা অসম্ভব? যেমন এই কথা মনে হওয়া, অমনি আমি তাড়াতাড়ি বিমল ও কুমারের কাছ ঘেঁসে দাঁড়ালুম। এই দুটি লোক, অসংখ্য বিপদে অভিজ্ঞতা লাভ করে বিপদ সম্বন্ধে এদের একটা সহজ জ্ঞান হয়েছে নিশ্চয়ই!

এইবারে বাঘা রুদ্ধ ক্রোধে গর গর করতে লাগল-শত্রুর উপস্থিতি সম্বন্ধে যেন নিঃসন্দেহ হয়েছে। পাছে বাঘা নাগালের বাইরে ছুটে যায়, সেই ভয়ে রামহরি তাড়াতাড়ি তার গলায় শিকল লাগিয়ে দিলে!

আমার মনের ভিতরে যাইই হোক, বাইরে আমি কিন্তু এখনও কিছু দেখতে-শুনতে পেলুম বা কোনও বিপদের অস্তিত্ব অনুভব করতে পারলুম না! চতুর্দিক তেমনি স্থির, স্তব্ধ ও শান্তিময়!

আচম্বিতে রামহরি পাহাড়ের নীচের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করে এস্ত কণ্ঠে বললে, দ্যাখো খোকাবাবু, দ্যাখো!

উজ্জ্বল চন্দ্রালোকে অবাক হয়ে দেখলুম, যে নির্জন পথ দিয়ে আমরা উপরে উঠেছি সেই পথ দিয়ে নীচে থেকে দলে দলে লোক নীরবে উপরপানে উঠে আসছে। আলোর ভুবনে যেন দলবদ্ধ ছায়ামূর্তি আকাশ থেকে অকস্মাৎ খসে পড়েছে।

বিমল খানিকক্ষণ অবাক হয়ে দেখলে। তারপর একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললে, যে কুলিগুলো আমাদের মোটঘাট নিয়ে পিছনে পিছনে আসছিল, তারা কোথায় গেল?

কুমার বললে, তারা হয় বিপদ দেখে পালিয়েছে, নয় ওদের দলে গিয়ে ভিড়েছে!

বিমল কঠিন হাস্য করে বললে, যাক, তল্পিতল্পার ভাবনা চুকে গেল, এখন নিজেদের ভাবনা ভাবা যাক!

ঠিক সেই সময়ে মুখ তুলে দেখি, পাহাড়ের উপরদিকেও দলে দলে নরমূর্তি ঠিক যেন পাথর কুঁড়ে আত্মপ্রকাশ করছে!

আমাদের নীচের ও উপরের পিছনের ও সুমুখের, দুইদিকেই পথ বন্ধ!

বিমলের চোখ বিদ্যুৎবেগে চারিদিকটা একবার দেখে নিলে সঙ্গে সঙ্গে তার হাতের টর্চটাও ক্ষিপ্রগতিতে চতুর্দিকে সমুজ্জ্বল আলোক-রেখা নিক্ষেপ করলো।

এমন সময়ে উপরের জনতাও নীচে আমাদের দিকে নেমে আসতে লাগল!

বিমলের মুখ প্রশান্ত। কুমারের দিকে তাকিয়ে দেখলুম, তারও ওষ্ঠাধরে দৃঢ়তাব্যঞ্জক কঠোর হাস্য। সেই ভূতভয়গ্রস্ত প্রৌঢ় রামহরি, সেও অটল পদে বিমলের পিছনে গিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াল—এমনকি বাঘা পর্যন্ত সদর্পে ল্যাজ তুলে গরর-গরর করছে! প্রভু, ভৃত্য, কুকুর, সব এক ধাতুতে গড়া! বিপদকে বিপদ বলে গ্রাহ্যই করে না!

এদের মধ্যে আমি শেষ পর্যন্ত কোন ভূমিকায় অভিনয় করব জানি না, কিন্তু আমার মনের অবস্থা বিশেষ শান্ত নয়!

উপর ও নীচে থেকে যারা আসছে, তারা আমাদের খুব কাছে এসে পড়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাদের কণ্ঠে কোনও শব্দ শোনা গেল না। যেন তারা সবাই বোবা!

হঠাৎ বিমল পাশের দিকে টর্চের আলো ফেলে বললে, ওই যে একটা শুড়িপথ, ওর শেষে একটা গুহার মতো দেখা যাচ্ছে! ওই গুহার মুখে বন্দুক নিয়ে দাঁড়ালে হাজার শত্রু থাকলেও শুড়িপথের ভিতরে ঢুকতে পারবে না। ওই ঠাঁই ছাড়া আপাতত আর কোথাও আশ্রয় দেখছি না! চলো সবাই ওর মধ্যে!

আমাদের পথ ছেড়ে ওখানে যেতে দেখে উপর ও নীচে থেকে জনতার শত শত কণ্ঠে সমুদ্রনির্ঘোষের মতো গম্ভীর এক গর্জন জেগে উঠল! এবং সে গর্জন ছুটে গেল পাহাড়ের শিখরে শিখরে প্রতিধ্বনিত হয়ে দূরে—আরও দূরে! স্তব্ধতাকে হত্যা করে এ যেন শব্দময় মৃত্যুর নৃশংস উল্লাস!