মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়স্য চরিত্রং Maharaj Krishna Chandra Rayashyo Choritrong

রাজীবলোচন মুখোপাধ্যায় RajibLochon Mukhopadhya

Genre: Classic, Biography, Historical

Language: Bengali

মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় (১৭১০-১৭৮৩)  নদীয়ার রাজা এবং কৃষ্ণনগর রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ভবানন্দ মজুমদারের বংশধর। কৃষ্ণনগরেই তাঁর জন্ম; পিতা রঘুরাম রায়। রক্ষণশীল এ হিন্দু রাজা বাংলা, সংস্কৃত ও ফারসি ভাষায় সমান ব্যুৎপন্ন ছিলেন। সঙ্গীত ও অস্ত্রবিদ্যায়ও তিনি পারদর্শী ছিলেন।

কৃষ্ণচন্দ্র একজন বিশিষ্ট সাহিত্যপ্রেমিক ছিলেন। মধ্যযুগের অন্যতম বিখ্যাত কবি  ভারতচন্দ্র ছিলেন তাঁর সভাকবি। এ ছাড়া সাধককবি  রামপ্রসাদ সেন, পন্ডিত  বাণেশ্বর বিদ্যালঙ্কার, কৃষ্ণানন্দ বাচস্পতি, জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন, হরিরাম তর্কসিদ্ধান্ত প্রমুখ তাঁর রাজসভা অলঙ্কৃত করেন। হাস্যরসিক  গোপাল ভাঁড় ছিলেন তাঁর দরবারের প্রখ্যাত বিদূষক।

নবদ্বীপসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংস্কৃতচর্চার ক্ষেত্রে কৃষ্ণচন্দ্রের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি সংস্কৃতচর্চা বিষয়ে খুবই উৎসাহী ছিলেন এবং এজন্য প্রচুর অর্থও ব্যয় করেন। নদীয়ার বাইরে সুদূর  বিক্রমপুর ও বাকলার পন্ডিতগণও তাঁর অর্থানুকূল্য ভোগ করতেন। তিনি নদীয়ায় অনেক টোল-চতুষ্পাঠী স্থাপন করেন এবং সেগুলির ব্যয়ভার বহনের জন্য করমুক্ত ভূসম্পত্তি দান করে সংস্কৃতচর্চার পথ প্রশস্ত করেন। সংস্কৃত বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার জন্য নদীয়ায় আগত বিদেশী ছাত্রদের জন্য তিনি মাসে দু’শ টাকা মাসোহারা দেবারও ব্যবস্থা করেছিলেন। 

রাজীবলোচন মুখোপাধ্যায় (১৮শ-১৯শ শতক)  ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের বাংলা বিভাগের পন্ডিত ও গদ্য লেখক। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার খড়দহ গ্রামে তাঁর জন্ম। সরল ও স্বচ্ছন্দ গদ্যভঙ্গির লেখক রাজীবলোচন একমাত্র গ্রন্থ কৃষ্ণচন্দ্ররায়স্য চরিত্রম (১৮০৫) মৌলিক গদ্যরচনা এবং আধুনিক বাংলা সাহিত্যে প্রথম জীবনীসাহিত্য হিসেবে ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। এই গ্রন্থে বর্ধমানের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের জীবনকথা ও চরিত্র-মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে, সেই সঙ্গে ইংরেজ তোষণনীতিও প্রকাশিত হয়েছে। উইলিয়ম  কেরী তাঁকে এ গ্রন্থ রচনায় অনুপ্রাণিত করেন এবং তাঁরই সুপারিশক্রমে তিনি ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ-কাউন্সিল কর্তৃক ১০০ টাকা পারিতোষিক লাভ করেন।